লন্ডন: কোনও পুরুষকে (Man) কর্মস্থলে (Workplace) টাক মাথা (Bald) নিয়ে কটাক্ষ করলে তা যৌন হেনস্থার সমতুল্য হিসেবে গণ্য করা হবে। এমনই রায় দিল ইংল্যান্ডের এমপ্লয়মেন্ট ট্রাইব্যুনাল (Employment Tribunal)।


ইংল্যান্ডের ট্রাইব্যুনালের যুগান্তকারী রায়


টনি ফিন নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় এই রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। ব্রিটিশ বাঙ্গ কোম্পানি নামে পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের একটি সংস্থায় ২৪ বছর ধরে ইলেকট্রিসিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন টনি। গত বছরের মে-তে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর তিনি অভিযোগ করেন, তাঁকে কর্মস্থলে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে, তাঁকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে, বয়সের কথা বলে তাঁর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বয়সের কথা বলে অন্যায় আচরণের অভিযোগ খারিজ করে দিলেও, বাকি সব অভিযোগই মেনে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। বিচারক জোনাথন ব্রেইনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ বলেছে, ‘মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে যে কারও চুল পড়ে যেতেই পারে। তবে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে চুল পড়ে গিয়ে টাক মাথা হওয়ার প্রবণতা বেশি। টাক নিয়ে কাউকে ব্যঙ্গ করা যৌন হেনস্থার মতোই অপরাধ।’


যৌন হেনস্থার অভিযোগ প্রমাণিত


টনি অভিযোগ করেন, ২০১৯-এর জুলাইয়ে বচসা চলাকালীন তাঁর মাথায় চুল না থাকা নিয়ে ব্যঙ্গ করেন কারখানার সুপারভাইজার জেমি কিং। তিনি হুমকিও দেন। সংস্থার পক্ষ থেকে এই ঘটনায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি টনির। সেই কারণেই তিনি ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন। এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে টনির দায়ের করা মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানিতেই ব্রিটিশ বাঙ্গ কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।


কর্মস্থলে মহিলারা প্রায়ই যৌন হেনস্থার শিকার বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু পুরুষরাও কর্মস্থলে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন, এই অভিযোগ খুব একটা শোনা যায় না। তাও আবার টাক মাথা নিয়ে ব্যঙ্গকে যৌন হেনস্থা বলে যে রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল, তা অভিনব। যুগান্তকারী এই রায় ভবিষ্যতে কর্মস্থলে অনেক ধরনের হেনস্থা ঠেকানোর ক্ষেত্রে বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে বলে মত আইনি বিশেষজ্ঞদের।