এডে (নেদারল্যান্ডস): নেদারল্যান্ডস, ইতালি, জার্মানি, ব্রিটেনে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের সাহায্য করছে রোবট ‘চার্লি’। সে-ই শিশুদের সুগারে শর্করার মাত্রা পরিমাপ করছে, এক গ্লাস দুধে কতটা কার্বোহাইড্রেট রয়েছে সেটাও বলে দিচ্ছে। যে পরিবারে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের দেখাশোনা করার জন্য কেউ নেই, তারা চার্লির উপরেই এই ভার দিয়ে নিশ্চিন্ত হচ্ছে।

 

নেদারল্যান্ডসে প্রায় ৬ হাজার শিশু টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতি বছর তাদের মধ্যে অন্তত এক জনের মৃত্যু হয়। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের ঠিক সময়ে ইঞ্জেকশন দিতে হয়, রক্তে শর্করার মাত্রা মাপতে হয়, খাদ্যে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণের হিসেব করতে হয় এবং কতটা ইনসুলিন নিতে হবে সেটাও ঠিক করতে হয়। এগুলি একটু কম-বেশি হলেই সংশ্লিষ্ট শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এমনকী সে কোমাতেও চলে যেতে পারে। সেই কারণেই চিকিৎসকরা আরও বেশি করে রোবটের উপর নির্ভর করছেন। কারণ, মানুষের ভুল হলেও চার্লির ভুল হওয়ার আশঙ্কা নেই।

 

চার্লির গায়ের রঙ লাল-সাদা। তার হাত, পা, চোখ ও কান রয়েছে। সে কথা বলতে পারে, নাচতেও পারে। গত বছরের মার্চ থেকে তাকে পরীক্ষামূলকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন চার বছরের জন্য এই প্রকল্পের খরচ বহন করছে। এখনও পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসে ৪০টি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুর সাহায্যে কাজে লাগানো হয়েছে চার্লিকে। নেদারল্যান্ডসের দুটি এবং ইতালির একটি হাসপাতালে এই রোবট রাখা হয়েছে। সেখানে গিয়ে বাচ্চারা চাইলে চার্লির সঙ্গে কথা বলতে পারে। তারা কম্পিউটার বা ট্যাবলেটের মাধ্যমেও চার্লির সাহায্য পেতে পারে।

 

নেদারল্যান্ডসের এডে শহরের একটি হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর গের্ট জ্যান ভ্যান ডার বার্গ বলেছেন, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশু ও তাদের বাবা-মা একদিনের প্রতি ১০-১৫ মিনিট অন্তর এই রোগের কথা ভাবতে থাকেন। ডায়াবেটিসের ফলে মারাত্মক মানসিক চাপ তৈরি হয়। এই কারণেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের সামাজিক সমস্যাও হয়। এই শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চার্লি। তবে এর চেয়েও উন্নত মানের রোবট তৈরি করার চেষ্টা চলছে।