বেজিং: প্রত্যেক দম্পতিকে তিন সন্তান রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল চিন। এমনটাই জানিয়েছে সেদেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম জিনহুয়া। দেশের ধুঁকতে থাকা জন্ম-হারকে পুনরুদ্ধার করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে, দেশের জনসংখ্যায় ক্রমশ বাড়তে থাকা গড় বয়সকে রুখতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার চিনা কমিউনিস্ট পার্টি পলিটব্যুরোর একটি বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত এক সদস্যকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, দম্পতিদের তিন সন্তানের অনুমতি ও তার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সহায়তা নীতি কার্যকর হওয়ার ফলে দেশের জনসংখ্যার কাঠামো উন্নত হবে।
কবে থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, সোমবারের বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বেশ কিছু বড় নীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্য়াকে লাগাম পরাতে দীর্ঘদিন ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল চিন সরকার। দীর্ঘদিন ধরে সেদেশে দম্পতি-প্রতি এক সন্তানের নিয়ম ছিল। ২০১৬ সালে তা বাড়িয়ে ২ করা হয়। কিন্তু, তাতেও, নিম্নমুখী জন্মের হারে তেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না আসায় এখন বাধ্য হয়ে তিন সন্তানের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বেজিং প্রশাসন।
জিনহুয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে হওয়া ওই বৈঠকে অবসর গ্রহণের বয়সও বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে পলিটব্যুরো। বলা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে এই বয়সসীমা বাড়ানো হবে। এই বিষয়টিকেও পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জন্মের হার হ্রাস পাচ্ছে মানে চিনের জনসংখ্যাও শীঘ্রই কমতে শুরু করবে। একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০২৫ সাল নাগাদ চিনের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার সর্বনিম্ন হবে। গত এক দশকে দেশের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ০.৫৩ শতাংশে এসে ঠেকেছে, যা ১৯৫০ সাল থেকে সবচেয়ে কম।
ছোট পরিবারের দিকেই বেশি ঝুঁকে পড়েছে পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপ। গত বছর চিনে ১.২০ কোটি শিশুর জন্ম হয়েছিল, যা ১৯৬১ থেকে সর্বনিম্ন।
এর আগে, সরকার ২ সন্তানের অনুমতি দিলেও, বিপুল খরচের আশঙ্কায় অধিকাংশ দম্পতির মনে তা রেখাপাত করেনি। এবার তিন সন্তানের অনুমতি তাঁদের মনে কী প্রভাব ফেলে সেটাই দেখার।