হংকং: এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তি আটকানো গেছে ঠিকই। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্বে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছে চিন। লাভ লোকসানের ব্যালান্স শিট খুলে তারা দেখছে, পাশে রয়েছে শুধু পাকিস্তান, এনএসজি-র মঞ্চে তাদের ভারতবিরোধী তীব্র গোঁয়ার্তুমি অন্য কোনও রাষ্ট্রই ভাল চোখে দেখেনি। তাই তাদের পক্ষে যথেষ্ট আন্তর্জাতির সমর্থন জোটাতে না পারায় এনএসজি-তে তাদের হয়ে মুখ্য আলোচনাকারী ওয়াং কুনকে ধমক দিল বেজিং। এই কুন যে সে কেউ নন, চিনের আর্মস কন্ট্রোল ডিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল পদে রয়েছেন ইনি।
জানা যাচ্ছে, ওয়াং কুন বেজিংকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, চিনের পক্ষে অন্তত এক তৃতীয়াংশ এনএসজি সদস্য দেশের সমর্থন জোটাবেন তিনি। বেজিংয়েরও ভরসা ছিল, তাদের সুপারপাওয়ার স্ট্যাটাসকে মাথায় রেখে অন্তত ১৫টি সদস্য রাষ্ট্র সমর্থন জোগাবে তাদের। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল ঘটেছে ঠিক উল্টোটা। ৪৮ সদস্য দেশের ৪৪টিই ভারতের পক্ষে রয়েছে, চিনকে সমর্থন করেছে মাত্র ৪টি রাষ্ট্র। বেজিংয়ের এখন ভয়, দক্ষিণ চিন সাগরে তাদের দখলদারিকে চ্যালেঞ্জ করে হেগের পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আরবিট্রেশনে ফিলিপিনস যে মামলা করেছে, এনএসজি-তে চিনা বিরোধী অবস্থান তাতে প্রভাব ফেলবে কিনা। ওই মামলায় হারতে পারে বেজিং। তাদের আশঙ্কা, তারা যেভাবে এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তি আটকেছে, ভারতও না সেভাবেই আন্তর্জাতিক আদালতের রায় সমর্থন করে তাদের বিপাকে ফেলে। ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বেজিং আরও এক ঘরে হয়ে তো পড়বেই, ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দ্য ল অফ দ্য সি থেকে তাদের বারও করে দেওয়া হতে পারে। ফলে ফিলিপিনসকে দক্ষিণ চিন সাগরের দখল ছাড়তে তো হবেই, বিশ্বে মুখও পুড়বে তাদের।
এখন চিন চেষ্টা করছে, গোটা বিশ্বের নামি দামি শিক্ষাবিদ, আইনজ্ঞ, কূটনীতিক তথা বিদেশি রাষ্ট্রগুলিকে নিজেদের পক্ষে এনে দাবি করাতে, যে, ওই মামলা বেআইনি। বেজিংয়ের দাবি, তাদের পক্ষে ৬০টি রাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু এনএসজি-তে তাদের ভারত বিরোধী অবস্থানের পক্ষে বাতাস না লাগায় তাদের আশঙ্কা, হেগের মামলার ফলও একইভাবে বিরুদ্ধে যেতে পারে। মুশকিল হল, এর ফলে মূল্য চোকাতে হবে যথেষ্ট বেশি।