ইসলামাবাদ ও বেজিং: ভারতের উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবরে সংযত প্রতিক্রিয়া চিনের। সব দেশই সুদূর মহাকাশে শান্তি, স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে তারা। সাফল্যের সঙ্গে এই পরীক্ষা চালিয়ে চিন, রাশিয়া, আমেরিকার সারিতে উঠে এসেছে ভারত, মহাকাশে সুপার পাওয়ার হয়েছে বলে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষণার পর এই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে চিন।
অন্যদিকে ইসলামাবাদে পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে মহাকাশের ‘সামরিকীকরণে’র বিরোধিতা করা হয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়সল বলেন, মহাকাশ গোটা মানবজাতির সবার উত্তরাধিকার। তার সামরিকীকরণ হতে পারে, এমন পদক্ষেপ নেওয়া এড়ানোর দায়িত্ব রয়েছে প্রতিটি দেশের। পাকিস্তান মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা রোধে রাষ্ট্রপুঞ্জে গৃহীত প্রস্তাবের কঠোর সমর্থক বলেও দাবি করেন তিনি। ভারতের পরীক্ষাকে কাল্পনিক শত্রুর সঙ্গে লড়াই আখ্যা দিয়ে তিনি কটাক্ষ করেন, এ ধরনের ক্ষমতা (স্যাটেলাইট ধ্বংস) নিয়ে অহঙ্কার প্রকাশ ডন কিহোতেকে মনে করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, আশা করব, অতীতে যে দেশগুলি অন্যদের এ ধরনের ক্ষমতা প্রদর্শনের কঠোর নিন্দা করেছে, আজ তারা মহাকাশে সামরিক বিপদ ঠেকাতে আন্তর্জাতিক বিধিব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করতে তৈরি হবে।
এই পরীক্ষার ফলে শত্রু পক্ষের উপগ্রহে আঘাত হেনে ফেলে দেওয়ার কৌশলগত ক্ষমতার অধিকারী হল ভারত। মোদি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তায় জানান, এটা বিরল কৃতিত্ব দেশের। পরীক্ষামূলক ভাবে অ্যান্টি স্যাটেলাইট ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে একটি তাজা উপগ্রহকে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই সাফল্যে সম্পর্কে লিখিত প্রতিক্রিয়ায় চিন বলেছে, আমরা এই সংক্রান্ত রিপোর্ট দেখেছি। আশা করব প্রতিটি দেশ অনেক অনেক দূরের মহাকাশে শান্তি, স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে।
প্রসঙ্গত, চিন ২০০৭ সালেই এ ধরনের পরীক্ষা চালায়, তাদের উপগ্রহ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র একটি অকেজো আবহাওয়া সংক্রান্ত স্যাটেলাইটকে ধ্বংস করে।
মোদি এদিন আরও দাবি করেন, কোনও নির্দিষ্ট দেশকে টার্গেট করে এই পরীক্ষা চালায়নি ভারত, উপগ্রহ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করে আন্তর্জাতিক চুক্তি, আইনও ভাঙেনি। সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার এক পক্ষকাল আগে প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা পরিচালিত মিশন শক্তি কর্মসূচির উদ্দেশ্য সামগ্রিক ভাবে ভারতের নিরাপত্তা জোরদার করা। নয়াদিল্লিতে বিদেশমন্ত্রকও এক বিবৃতিতে ভারতের মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নামার কোনও অভিপ্রায় নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে। বলেছে, আমরা সবসময়ই বলি, মহাকাশকে কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা উচিত। আমরা মহাকাশের অস্ত্রসজ্জার বিপক্ষে, মহাকাশ কেন্দ্রিক সম্পদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা জোরদার করতে আন্তর্জাতিক প্রয়াসকে সমর্থন করি।


.