বেজিং: ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে শনিবার চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গোয়ায় পা রাখার প্রাক্কালে ভারতের পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর (এনএসজি) সদস্যপদ ও জয়েশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জকে দিয়ে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার ইস্যুতে আগের অবস্থানই বহাল রয়েছে বলে জানিয়ে দিল বেজিং।


চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং কিছু ‘বিতর্ক’ সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারত-চিন সম্পর্কে ‘বিরাট অগ্রগতি হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন, কিন্তু এনএসজি ও আজহার প্রশ্নে তাঁদের অবস্থান বদলায়নি বলে জানিয়ে দিয়েছেন। পঠানকোট হামলার প্রেক্ষাপটে আজহারকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চিনের অবস্থান বলেছি আমি। এটাই আবার বলব যে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ মেনে সংশ্লিষ্ট কমিটিই তালিকা তৈরি করে। চিন এটাই মনে করে যে, সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে নিষিদ্ধ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপু্ঞ্জের ১২৬৭ কমিটিকে প্রকৃত তথ্য বিচার করেই সদস্যদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ব্যাপারে সদস্য দেশগুলির মধ্যে মতভেদ রয়েছে, সেটাই চিনের আজহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারিতে বাধা দেওয়ার কারণ, বলেন তিনি। জানান, চিন টেকনিক্যাল কারণে যে দ্বিতীয় বাধা দিয়েছে, তার ফলে তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যথেষ্ট সময় মিলবে। এটা চিনের দায়িত্বশীল, পেশাদার মনোভাবের প্রতিফলন বলেও দাবি করেন গেং।

ভারতের এনএসজি-তে ঢোকার ব্যাপারেও চিনের অবস্থানে কোনও বদল হয়নি বলে জানান তিনি। গত মাসে চিনা সহকারী বিদেশমন্ত্রী লি বাওডং ৪৮ সদস্যের গোষ্ঠীতে নতুন সদস্য নেওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্য হওয়ার ওপর জোর দিয়েছিলেন। আজ গেং বলেন, ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল ধারাটি ইতিবাচক, দু দেশের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়ে সহযোগিতাই বেশি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুটি দেশ কিছু বিতর্ক, বিরোধ নিয়ে মতামত বিনিময় করতে, সমাধান খুঁজতে  আলোচনা, সহযোগিতা চালিয়ে যেতে পারে।

এদিকে এর মধ্যেই চিনা বিদেশমন্ত্রক অধীনস্থ এক গবেষণা সংস্থার ডিরেক্টর, চিনা বিশেষজ্ঞ হু শিসেং জানিয়েছেন, ভারত পাকিস্তানকে কোণঠাসা, বিচ্ছিন্ন করে দিলে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে যাওয়া  ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডরের নির্মাণ কাজে গতি বাড়িয়ে দিতে পারে চিন।  সম্প্রতি উরির ঘটনার জেরে ইসলামাবাদে হতে চলা সার্ক সম্মেলন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় উপমহাদেশে একঘরে হয়ে পড়েছে পাকিস্তান। সে ব্যাপারে ওই বিশেষজ্ঞ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি ও কী করে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, পাকিস্তানের সঙ্গে সে ব্যাপারে কথা বলতে হবে চিনকে।