বেজিং: ডোকলাম ইস্যু নিয়ে ভারতের ওপর চাপ বাড়াতে চেষ্টার কোনও কসুর করছে না চিনি। সরকারি সংবাদ মাধ্যমের পর এবার চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ)-র এক সমরবিশারদ নিজেদের সুবিধা মতো যুক্তি সাজিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরে হস্তক্ষেপের হুমকি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ডোকলাম এলাকায় ভারতের ‘অনধিকার প্রবেশ’ জম্মু ও কাশ্মীরের ‘তৃতীয় পক্ষের’ হস্তক্ষেপের পূর্ব নজির গড়ে তুলতে পারে।

ডোকলাম নিয়ে চলতি অচলাবস্থার মধ্যে এর আগে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমেও একই ধরনের যুক্তি তুলে ধরা হয়েছিল। এবার একই হুমকি এল পিএলএ-র নেভি ক্যাপ্টেন ঝ্যাং ইয়ের কাছ থেকে। ইয়ে পিএলএ-র নেভাল রিসার্চ ইন্সস্টিটিউটের ফেলো এবং গুরুত্বপূর্ণ সমরবিশারদ।

ইয়ে এমন সময় এই মন্তব্য করেছেন, যখন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ব্রিকস সম্মেলন উপলক্ষ্যে বেজিং সফর করছেন। আজ সকালে ব্রিকস-ভুক্ত দেশগুলির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠক এবং পরে তিনি চিনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের সঙ্গেও দেখা করবেন। গতকাল মুখোমুখি বৈঠক করেছেন চিনের প্রতিনিধি ইয়াং জেইচির সঙ্গে।

ইয়ে বলেছেন, ‘‘চিন-ভুটান সীমান্ত বিতর্কে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর কি চিনের রাস্তা তৈরির কাজ আটকাতে ভারত ও চিনের প্রতিষ্ঠিত সীমান্ত পেরিয়ে অনধিকার প্রবেশের অধিকার রয়েছে? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে ভারতের যুক্তি ক্ষেত্রে এটা খুবই বিপজ্জনক। তাহলে তো পাকিস্তানের অনুরোধে তৃতীয় কোনও দেশের বাহিনী কাশ্মীর সহ ভারত ও পাকিস্তানের বিতর্কিত এলাকায় ঢুকতে পারে’’।

গ্লোবাল টাইমস-কে ইয়ে এ কথা বলেছেন।

ইয়ের আরও দাবি, ভুটানের বিবৃতিতেও ‘ভারতের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া বা ভারত সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করার’ কোনও উল্লেখ নেই।

ইয়ের আরও দাবি, চিন ও ভুটানের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে ২৪ দফা আলোচনায় ‘সহমতে’ পৌঁছনো গিয়েছে। তবে চূড়ান্ত সীমা নির্ধারনের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। ইয়ের অভিযোগ, এই আলোচনা প্রক্রিয়া ভেস্তে দিচ্ছে নয়াদিল্লি।

তিনি আরও বলেছেন, সীমান্ত বিবাদের সমাধান হলে চিন ও ভুটানের মধ্যে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে, যা দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করবে। এতে ভুটানের ওপর ভারতের প্রভাব দুর্বল হবে।

ইয়ের দাবি, সীমান্ত বিতর্ককে কাজে লাগিয়ে ভুটানে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করছে। এতে ভুটানের ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে। তাঁর অভিযোগ, ভুটানকে সাহায্য করার নামে চিনের বিরুদ্ধে সামরিক কৌশলগত সুবিধা বাড়ানোর রাজে ভুটানকে ব্যবহার করছে ভারত।

ইয়ে আরও বলেছেন, সমস্যা সমাধানের জন্য ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে ভারতকে।