নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলির কাছে কাশ্মীরে 'অত্যাচারের' ঘটনা নিয়ে ভারতকে চাপ দিতে সচেষ্ট হওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। কিন্তু সেই চেষ্টা তো সফল হলই না, বরং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কাশ্মীরের উরিতে সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনায় কোণঠাসা হচ্ছে পাকিস্তান। উরির হামলার নিন্দা করতে গিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য পাকিস্তানের নাম বা পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনের নাম উল্লেখ করেছে। এতে ইসলামাবাদের অস্বস্তি বেড়েছে। উল্লেখ্য, সন্ত্রাসবাদকে ধারাবাহিকভাবে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে একঘরে করার নীতি নিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেভাবে ভারতের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তাতে হালে পানি পাচ্ছে না পাকিস্তানের কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে হাওয়া গরমের চেষ্টা।


বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ উরি হামলা নিয়ে বিভিন্ন দেশের বিবৃতি প্রকাশ করেছেন।

নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের মধ্যে রাশিয়া ও ফ্রান্স সরাসরি পাকিস্তান বা পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনের নাম করে উরি হামলার নিন্দা করেছে। আরও দুই স্থায়ী সদস্য দেশ ইংল্যান্ড ও আমেরিকা সরাসরি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করলেও এই হামলায় ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তানের বন্ধু চিন উরি হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে, তারা যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরোধিতা ও নিন্দা করে।

সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের সমর্থন নিয়ে বিশ্বের বৃহত্ শক্তিগুলি যে অবস্থান কঠোর করছে, তা ফ্রান্স ও রাশিয়ার বিবৃতি থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

রাশিয়া উরি হামলার নিন্দা করে বলেছে, জানুয়ারিতে পঠানকোটে ভারতের বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলার পর ফের নিয়ন্ত্রণ রেখার সামনে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটল। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মস্কো বলেছে, উরির সেনা ছাউনির কাছে এই হামলায় যুক্তরা পাকিস্তান থেকে এসেছিল বলে নয়াদিল্লি বলছে।

ফ্রান্সও ভারতের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। ভারত সন্ত্রাসবাদের শিকার মন্তব্য করে ফ্রান্স বলেছে, এ ব্যাপারে তারা ভারতের পাশেই রয়েছে। একইসঙ্গে লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো ভারত-বিরোধী জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও বলেছে ফ্রান্স। উল্লেখ্য, এই জঙ্গি সংগঠনগুলি পাকিস্তানে সক্রিয়।

বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ জার্মানিও সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে।

এছাড়াও জাপান, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, মরিশাস, নেপাল, সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, বাহারিন, কানাডা, মঙ্গোলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলির বিবৃতিও প্রকাশ করেছেন স্বরূপ।