নিউ ইয়র্ক: করোনাভাইরাস শুধু স্বাদ বা গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতাই নষ্ট করে দিচ্ছে না, তারই সঙ্গে স্নায়ুর উপরেও প্রভাব ফেলছে। এর ফলে শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শরীরের আরও নানা অংশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এমনই জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কলিন লি প্রেল।


ইন্দ্রিয়ের উপর করোনার প্রভাব সম্পর্কে এই অধ্যাপক জানিয়েছেন, ‘স্নায়বিক তন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলছে করোনাভাইরাস। প্রদাহর ফলে শ্রবণশক্তি ও ভেস্টিব্যুলার সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেভাবে স্বাদ ও গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা নষ্ট করে দিচ্ছে করোনা, সেভাবেই সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমও নষ্ট করে দিতে পারে।’


অধ্যাপক কলিন আরও জানিয়েছেন, ‘একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা অতিমারীর ফলে নানা ধরনের মানসিক সমস্যা হচ্ছে। লকডাউন সংক্রান্ত মানসিক চাপ, দীর্ঘসময় ধরে মাস্ক পরে থাকার ফলে শ্রবণশক্তির উপর প্রভাব পড়ার নেতিবাচক দিক সংক্রান্ত উদ্বেগ সমস্যা তৈরি করছে। এর ফলেই হয়তো শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করো করোনা আক্রান্ত হওয়ার আগেই যদি কারও কানে সমস্যা থাকে, তাহলে সেই সমস্যা বাড়তে পারে।’


গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে একাকীত্ববোধ, ঘুমের সমস্যা, বিভিন্ন বিষয়ে উদ্বেগ, অবসাদ, বিরক্তি এবং আর্থিক বিষয়ে চিন্তা নানারকম শারীরিক সমস্যা তৈরি করছে। এর ফলেই শ্রবণশক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। করোনার আগে যাঁদের এই সমস্যা ছিল, এখন সেই সমস্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। করোনা সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রথমদিকে ক্লোরোকুইন বা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের মতো যে ওষুধগুলি দেওয়া হচ্ছিল, তার ফলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শ্রবণশক্তি সংক্রান্ত সমস্যা যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনই যাঁদের কিডনির রোগ রয়েছে, তাঁদেরও অসুস্থতা বেড়েছে। 


এ বিষয়ে অধ্যাপক কলিন জানিয়েছেন, ‘কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে ওষুধ শরীরের উপর কার্যকর হয় না এবং শরীর থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়েও যায় না। এর ফলে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। বিশেষ করে বয়স্কদের যদি কিডনির রোগ থাকে, তাহলে করোনা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।’