কোপেনহেগেন:  ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টই কি শেষ ডেকে আনবে করোনাভাইরাস অতিমারীর? এমনই ইঙ্গিত খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় ডিরেক্টরের। তিনি রবিবার বলেছেন,  ওমিক্রন ভ্যারিয়ন্ট কোভিড-১৯ অতিমারীকে একটা নয়া পর্যায়ে নিয়ে গেছে এবং তা ইউরোপে এই অতিমারীর অন্ত ডেকে আনতে পারে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় ডিরেক্টর হ্যান্স ক্লুগ সংবাদসংস্থাকে বলেছেন, এটা সম্ভব যে, এই অঞ্চল অতিমারীর শেষের শুরুর দিকে এগোচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, আগামী মার্চের মধ্যে ইউরোপে ৬০ শতাংশ মানুষই ওমিক্রন আক্রান্ত হতে পারে। 


হান্স বলেছেন, ওমিক্রনের চলতি যে ঢেউ সমগ্র ইউরোপে দাপট দেখাচ্ছে, তার প্রকোপ কমলে আগামী কয়েক সপ্তাহ ও কয়েকমাস একটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকবে। এর কারণ ভ্যাকসিন বা সংক্রমণের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে।  তিনি আরও বলেছেন, এরপর বছরের শেষ দিকে কোভিড-১৯ ফিরে আসতে পারে, তার মানে এই নয় যে অতিমারীও ফিরে আসবে। 


উল্লেখ্য, গত রবিবার একই ধরনের আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানী অ্যান্টনি ফাউসি। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, আমেরিকার বিভিন্ন অংশ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে, যা খুবই ভালো। তবে এ ব্যাপারে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, আমেরিকার উত্তর-পূর্বে আক্রান্তের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে যে কমছে, সেই ধারা অব্যাহত থাকলে, সারা দেশেই ঘুরে দাঁড়ানোর পর্ব দেখা যেতে পারে। 


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠনের আফ্রিকার আঞ্চলিক অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। ওমিক্রনের ফলে যে চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছিল, তারপর থেকে প্রথমবার মৃতের সংখ্যাও কমছে। 


উল্লেখ্য, গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। কিন্তু টিকাপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এর উপসর্গ তুলনায় কম গুরুতর। এই ওমিক্রণের দাপটের পর আশা জেগেছে যে, কোভিড ১৯ এরপর অতিমারী থেকে সামলানোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি সহজ এনডেমিক অসুস্থতা বা সিজনাল ফ্লুতে রূপান্তরিত হতে পারে।  


ক্লুগ অবশ্য এখনও কোভিড ১৯-কে এন্ডেমিক হিসেবে বিবেচনা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ প্রসঙ্গে কথা হচ্ছে। কিন্তু করোনাভাইরাস বেশ কয়েকবারই আমাদের বিস্মিত করেছে। তাই খুবই সতর্ক থাকতে হবে। তিনি একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ওমিক্রন এত ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে, ফলে এর অন্য ভ্য়ারিয়েন্টও উঠে আসতে পারে।