বেজিং: চিনে ফের করোনাভাইরাসের উপদ্রবের চোখরাঙানির পরিপ্রেক্ষিতে রাতারাতি হাসপাতাল গড়ে তুলল সরকার। মাত্র পাঁচদিনের মধ্যে ১,৫০০ কক্ষের হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। সংক্রমণের উর্দ্ধগতির মোকাবিলার উদ্দেশ্যেই এই যুদ্ধকালীন তৎপরতা। ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার এবং বিদেশ থেকে আগত আক্রান্ত ব্যক্তি ও পন্যই এর জন্য দায়ী বলে মনে করছে সরকার।
সরকারি সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, বেজিংয়ের দক্ষিণে হুবেই প্রদেশের ন্যানগংয়ের ৬,৫০০ কক্ষের ছয়টি হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে। এগুলির মধ্যে একটি হল দেড় হাজার কক্ষের এই হাসপাতাল।
২০১৯-র শেষের দিকে দেশের মধ্যভাগের শহর উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছিল চিন। কিন্তু ডিসেম্বর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল।


সংবাদসংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, ন্যানগং ও হুবেইয়ের প্রাদেশিক রাজধানী শিজিয়াঝুয়াংয়ের মোট ৬৪৫ জনের চিকিৎসা চলছে। শিজিয়াঝুয়াংয়ের একটি ৩,০০০ কক্ষ বিশিষ্ট হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে।
উত্তর-পূর্বে হেইলোংজিয়াং ও লিয়াওনিং এবং দক্ষিণ পশ্চিমের সিচুয়ান সহ বেজিংয়েও ভাইরাস ক্লাস্টার্স পাওযা গিয়েছে। জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সংক্রমণ স্বাভাবিকের থেকে দ্রুতগতিতে ছড়ায়। এর মোকাবিলার কাজ খুবই কঠিন। গোষ্ঠী সংক্রমনও ইতিমধ্যে ঘটেছে। তাই এর প্রতিরোধ খুবই কঠিন।
কমিশন বলেছে, সাম্প্রতিক এই সংক্রমনের কারণ বিদেশ থেকে আসা মানুষ ও পণ্য। আমদানির কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের অপর্যাপ্ত সুরক্ষা ও অস্বাভাবিক ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে কমিশন। তবে এ ব্যাপারে তারা বিস্তারিতভাবে কিছু জানায়নি।
চিনের দাবি, এই ভাইরাসের উৎপত্তি বিদেশে হয়ে থাকতে পারে। আমদানিকৃত খাবার, বিশেষ করে ফ্রোজেন মাছের ক্ষেত্রে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়ার কথা তারা জানিয়েছে। যদিও বিদেশের বিজ্ঞানীরা চিনের এই দাবি সম্পর্কে সন্দিহান।

জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছ, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ১৩০ জন আক্রান্তের খবর মিলেছে। এরমধ্যে ৯০ জনই হুবেই প্রদেশের।

শনিবার হুবেই সরকার মধ্যরাত থেকে অতিরিক্ত ৩২ আক্রান্তের কথা জানিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে।
সরকারি টেলিভিশনে জানা গেছে, শিজিয়াঝুয়াংয়ে কর্তৃপক্ষ ১০০০ কক্ষের পরিকল্পিত হাসপাতাল নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করার কথা জানিয়েছে।

উহানে সংক্রমণ যখন প্রথমে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখনও তড়িঘড়ি এ ধরনের হাসপাতাল তৈরির কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছিল। শিজিয়াঝুয়াংয়ে শুক্রবারের মধ্যে ১০ কোটিরও বেশি মানুশের পরীক্ষা হয়েছে বলে খবর। এক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত ২৪৭ জনের হদিশ মিলেছে।