হাভানা: সারা বিশ্বে সিগারের জন্য প্রসিদ্ধ কিউবা আবিষ্কার করে ফেলেছে ক্যানসার রোগের দাওয়াই! সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে। শুধু মারণ রোগ ক্যানসারের চিকিত্সাই নয়, শরীরে ক্যানসারের ছড়িয়ে পড়া রুখতে সক্ষম একটি কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেছে কিউবা।
খুব ভালো মানের সিগার পাওয়া যায় কিউবায়।এ জন্য এ দেশে সিগার সেবনের নেশা অনেকেরই। এজন্য ফুসফুসের ক্যানসার আক্রান্তর সংখ্যা কিউবার বেশি। সে দেশে মৃত্যুর চতুর্থ সবচেয়ে বড় কারণ ক্যানসার। ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্তদের নিয়ে ২০০৭-এ একটি গবেষণা চালানো হয়। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই রিপোর্ট অনুসারে, সীমাভ্যাক্স নামে একটি ভ্যাকসিনে উপকৃত হয়েছেন ক্যানসারে আক্রান্তরা।
যে রোগীদের শরীরে এই ভ্যাকসিনের ব্যবহার হয়েছে তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি রোগীর শরীরে ক্যানসারের টিউমার ধ্বংস করার অ্যান্টিবডি তৈরি হতে শুরু করে। রোগীদের ওপর ওই গবেষণার অনুসারে, ওই ভ্যাকসিনের ব্যবহারে ষাট বছরের কম বয়সের রোগীদের বেঁচে থাকার সংখ্যা বেশ বেড়ে গিয়েছে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত কিউবায় সীমাভ্যাক্সের মাধ্যমে এক হাজার ক্যানসার আক্রান্তর সফল চিকিত্সা হয়েছে। সারা বিশ্বে এই সংখ্যা পাঁচ হাজারের বেশি।
রোজবেল পার্ক ক্যানসার ইন্সস্টিটিউটের ডাক্তার লী-র বক্তব্য অনুযায়ী, কিউবায় ৪০৫ ক্যানসার আক্রান্তর শরীরে ব্যবহার করে জানা যায় যে, এই ভ্যাকসিন কার্যকরী ও নিরাপদ।
যদিও ওই গবেষণা রিপোর্ট এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সামনে আসেনি। তবে জানা গেছে, এর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই। একটি ভ্যাকসিনের দাম মাত্র ১ ডলার এবং এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
এই ভ্যাকসিনের সাফল্যে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত চিকিত্সকরা দারুন খুশি। তাঁদের দাবি, এই ভ্যাকসিনের ব্যবহার ক্যানসার নিরাময়ে সহায়ক তো বটেই, সেই সঙ্গে দ্বিতীয়বার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।শুধু ফুসফুসেরই নয়, ব্রেট, অন্ত্র, গলা, মাথা ও প্রোস্টেট ক্যানসার নিরাময়েও সহায়ক এই ভ্যাকসিন।
কীভাবে কাজ করে এই ভ্যাকসিন
এই ভ্যাকসিন রোগীদের শরীরে এমন অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করে যা, ক্যালসার কোষের শরীরে ছড়িয়ে পড়া রুখে দিতে পারে।
শুধু তাই নয়, ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যাদের রয়েছে তাদের জন্যও এই ভ্যাকসিন দারুন কার্যকর হবে বলে দাবি। এই দাবি ঠিক হলে আগামী দিনে ক্যানসারের টিকাও চলে আসতে পারে।
কিউবার মলিকিউলার ইমিউনোলজি সেন্টারের চিকিত্সকরা এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন। এখানে মস্তিষ্ক, প্যানক্রিয়াসের ক্যানসার, গ্লুকোমিয়া ও লিম্ফোমা আক্রান্তদের জন্য নয়া ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চলছে।