হিউস্টন:  টেক্সাসে মৃত ভারতীয় শিশুকন্যা শেরিন ম্যাথিউজ নিখোঁজ এবং হত্যাকাণ্ডে এর মধ্যেই নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। ভারত থেকে দত্তক নেওয়া ওই অনাথ শিশুর পালক পিতা-মাতা দুজনেই এখন জেলে রয়েছে। ওয়েসলি ও সিনি ম্যাথিউজের বিরুদ্ধে শিশুকে আঘাত এবং চাইল্ড এন্ডেনজারমেন্ট সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনেছে রিচার্ডসন পুলিশ। গত ৭ অক্টোবর থেকে নিঁখোজ ছিল এই শিশু। ২৩ অক্টোবর তার দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। তদন্তের স্বার্থে সেদিনই দম্পতির বায়োলজিক্যাল কন্যাকে বাড়ি থেকে ফস্টার কেয়ারে পাঠিয়ে দেয় তদন্তকারী আধিকারিকেরা। এতদিন পর্যন্ত সেখানেই ছিল চার বছরের মেয়েটি। অবশেষে তাকে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হল। এখন সে হিউস্টনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রয়েছে।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুদূর টেক্সাসে ছোট্ট শেরিন (সরস্বতী) ম্যাথিউজের নিঁখোজ রহস্য এবং পরে কালভার্ট থেকে শিশুটির দেহ উদ্ধার হওয়া এবং ঘটনার নৃশংসতা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। ভারতের নালন্দা থেকে দত্তক নেওয়া হয় শেরিনকে। সুন্দর জীবনের বদলে মার্কিন মুলুকে গিয়ে পালক পিতা-মাতার হাতে হেনস্থার শিকার হতে হয় নিষ্পাপ শিশুকে। শিশুটির বাবা কখনও পুলিশের কাছে জানায়, দুধ না খাওয়ার জন্যে রাত তিনটেয় সে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল, কখনও আবার বয়ান বদলে বলে, গলায় দুধ আটকে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায় সে। তারপর সে নিজে দেহটি বাইরে ফেলে আসে। ওয়েসলি গ্রেফতার হয় গত ২৩ অক্টোবর। তারপর বেশ কয়েকদিন টালবাহনার পর শিশুটির মা সিনি ম্যাথিউজকে গ্রেফতার করে রিচার্ডসন পুলিশ। সিনি তার বয়ানে জানায়, গত ৬ অক্টোবর অর্থাত নিখোঁজ হওয়ার আগের দিন বাচ্চাটিকে তারা বাড়িতে একা রেখে নিজের বায়োলজিক্যাল কন্যা এবং স্বামীর সঙ্গে নৈশভোজে বেরিয়ে যায়।

আপাতত শেরিনের মৃত্যুর তদন্ত চলছে। বাচ্চাটির মৃত্যুর আসল কারণ এখনও জানা যায়নি। সেখানকার পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্ত এবং টক্সিকোলজি রিপোর্ট সহ অন্যান্য পরীক্ষার ফল হাতে চলে এলেই তারা এই মৃত্যুর আসল কারণ জেনে যাবেন। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত ওয়েসলি এবং সিনি দুজনের ওপরই আরও কঠিন চার্জ লাগু হতে পারে। ওয়েসলির আইনজীবী সূত্রে খবর, স্ত্রীর গ্রেফতার হওয়ার খবরে তিনি দুঃখিত। তার আশা সিনি খুব তাড়াতাড়িই মুক্তি পাবে, এবং তাদের বায়োলজিক্যাল কন্যা আবার তার মায়ের সঙ্গে থাকতে পারবে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওয়েসলি এবং সিনি দুজনেই জেরায় জানিয়েছে, তারা যখন রেস্তোরাঁ থেকে ফিরে এসেছিল, তখন তারা দুজনেই শেরিনকে জীবিত দেখেছিল তাদের রান্নাঘরে। শেরিনের পালক পিতা তার বয়ানে জানিয়েছিল, মেয়ে দুধ না খাওয়ায় রাগে, হতাশায়, ক্ষোভে সে শেরিনকে বাড়িতে একা রেখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই ঘটনার দিনই রাত তিনটে নাগাদ গ্যারাজে যখন শেরিনকে দুধ খাওয়াতে যায় সে, গলায় আটকে মৃত্যু হয় শেরিনের। সিনির দাবি, ঘটনার সময় সে ঘুমোচ্ছিল।