ওয়াশিংটন: কোনওদিনও মার্কিন প্রশাসনে কোনও ধরণের পদে বসেননি! জীবনে কোনওদিন নির্বাচনেও লড়েননি! আর সেই তিনিই কি না প্রথমবার সবচেয়ে বড় ভোটে অংশ নিয়ে জিতে এক্কেবারে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্রের শীর্ষ আসনে! তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প! বিতর্ককে সঙ্গী করেই হেভিওয়েট প্রতিযোগীকে হেলায় হারিয়ে হোয়াইট হাউসে পৌঁছে গেলেন তিনি। তাবড় ভোট-পণ্ডিতদের সঙ্গে হতবাক গোটা বিশ্বও। প্রচারের সময় নরেন্দ্র মোদীর আদলে ট্রাম্প নিজেই স্লোগান তুলেছিলেন...অব কি বার ট্রাম্প সরকার!
শেষমেশ হোয়াইট হাউসে পৌঁছেও গেলেন রিয়েল্ট এস্টেট ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আমেরিকাকে চমকে দিয়ে, গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে কার্যত বড়সড় রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়াই প্রথমবার ওভাল অফিসে পা রাখতে চলেছেন কোনও ব্যক্তি।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে আমেরিকার ৪৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন এই মার্কিন ধনকুবের।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মোট আসন ৫৩৮।
জিততে দরকার ২৭০টি আসন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৭৬টি আসন। অনেক পিছিয়ে থাকা হিলারি ক্লিনটন পেয়েছেন মাত্র ২১৮টি আসন।
যে প্রদেশগুলো কোন দিকে ঝুঁকবে তারউপর ভোটের ফল নির্ভর করছিল, তার অধিকাংশই গিয়েছে ট্রাম্পের দিকে।

ফ্লোরিডা, ওহায়ো, লোয়া, নর্থ ক্যারোলাইনায় জয়ী হয়েছেন ট্রাম্প। হিলারি জিতেছেন ভার্জিনিয়া, নেভাডা এবং পেনসিলভেনিয়ায়।
বিশ্বের সবথেকে ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রনায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর ৭০ বছরের ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন কোন কোন কাজ তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে কেউই আমেরিকাবাসীর বিশেষ পছন্দের ছিলেন না। তবে ট্রাম্প যে শেষমেশ হিলারিকে হারিয়ে বাজিমাত করে দেবেন, এটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। কারণ, নির্বাচনের প্রচারের সময় থেকেই ট্রাম্পের নানা মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। কখনও তিনি বলেছেন, পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে মুসলিম সম্প্রদায়কে মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত।
কখনও আবার মেক্সিকোর অভিবাসীদের সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, মেক্সিকো যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লোকজন পাঠায় তখন সেখান থেকে ভালো মানুষদের পাঠানো হয়না। তাঁরা মাদক নিয়ে আসে। তাঁরা অপরাধ নিয়ে আসে। তাঁরা ধর্ষক।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ওবামা ও প্রতিপক্ষ হিলারিকে আক্রমণ করতে গিয়ে তো তিনি সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছেন। বলেছেন, ওবামা আইএসের প্রতিষ্ঠাতা। আর হিলারি আইএসের সহ প্রতিষ্ঠাতা।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে এই সব বিতর্কিত মন্তব্যই সম্ভবত ট্রাম্পকে পৌঁছে দিল হোয়াইট হাউসে।

জয়ের পর অবশ্য ট্রাম্পের গলায় শোনা গিয়েছে হিলারির প্রশংসা।

বুঝিয়ে দিয়েছেন আর বিতর্ক নয়, এবার কাজ...
নারী বিদ্বেষী মন্তব্য, যৌন হেনস্থার অভিযোগও উঠেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে! তবুও শেষপর্যন্ত জয়ী হয়েছেন তিনি! আর জয়ের পরই সুর নরম আমেরিকার সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের।
২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প।