ইসলামাবাদ: রাশিয়া, আমেরিকা, চিন থেকে প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি। এবার জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ভারতের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ ও মুসলিম দুনিয়ার সমর্থন জোগাড় করা ইসলামাবাদের পক্ষে সহজ হবে না বলে অভিমত জানালেন পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী মুজফফরাবাদে সাংবাদিক সম্মেলনে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলির সমর্থন আদায়ে পাকিস্তানিদের ‘নতুন লড়াইয়ে নামা’র ডাক দিয়েছেন তিনি।
ভারত ৩৭০ ধারা তুলে নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর পাকিস্তান জানায়, তারা এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের দ্বারস্থ হবে। ভারতও পাল্টা স্পষ্ট আন্তর্জাতিক মহলকে জানিয়ে দেয়, ৩৭০ ধারা বাতিল, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত একেবারেই তার ঘরোয়া ব্যাপার। পাকিস্তানকে ‘বাস্তব মেনে নেওয়া’র পরামর্শও দিয়েছে ভারত।
কুরেশি পাকিস্তানিদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, মূর্খের স্বর্গে বাস করা উচিত নয়। ওখানে (রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ) কেউই মালা হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে না। কেউই সেখানে আপনার জন্য অপেক্ষা করে নেই। কোনও বিশেষ মুসলিম রাষ্ট্রের নাম না করেই তিনি এও বলেন, উম্মাহর অভিভাবকরাও (ইসলামিক গোষ্ঠী) নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য হয়তো কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে সমর্থন করবে না। এ নিয়ে কুরেশি আরও বলেন, দুনিয়ায় যার যার নিজের স্বার্থ থাকে। ভারত ১০০ কোটির বেশি জনসংখ্যার বিরাট বাজার। অনেকে সেখানে বিনিয়োগ করেছে। আমরা প্রায়ই উম্মাহ, ইসলামের কথা বলি, কিন্তু উম্মাহর অভিভাবকরাও সেখানে পয়সা ঢেলেছে। তাদেরও নিজস্ব স্বার্থ আছে।
কুরেশি এহেন মতামত জানালেন রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম সদস্য হিসাবে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত পদক্ষেপে সায় দেওয়ার দুদিন বাদে। ভারতের সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরের মর্যাদায় বদল করা হয়েছে, দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে তার বিভাজন ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়ে দেয় রুশ বিদেশমন্ত্রক। আমেরিকাও নিরপেক্ষ অবস্থান বহাল রেখে জানিয়ে দেয়, তাদের কাশ্মীর নীতি একই আছে, ভারত ও পাকিস্তানকে সংযত থেকে মতভেদ কাটাতে সরাসরি নিজেদের মধ্যে কথা বলতে হবে।
পাকিস্তানের বরাবরের মিত্র চিন ভারতের লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত এলাকা বানানোর সিদ্ধান্তে আপত্তি করলেও তাদের সমর্থন চাইতে যাওয়া কুরেশিকে জানিয়ে দেয়, তারা ভারত ও পাকিস্তান, উভয়কেই প্রতিবেশী, বন্ধু বলে ভাবে, এটাই চায় যে, দুদেশ রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাব ও সিমলা চুক্তির ভিত্তিতে কাশ্মীর সমস্যা মিটিয়ে ফেলবে।