বেজিং: বিদেশ মন্ত্রকের মন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম বিদেশ সফরে ডঃ এস জয়শঙ্কর। তিন দিনের সফরে চিন গিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। সেখানে মিডিয়া কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করবেন তিনি। চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠকও করার কথা রয়েছে তাঁর। তার আগে প্রসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিশ্বস্ত সেনানী উপরাষ্ট্রপতি ওয়াং কাইশানের সঙ্গে একদফা বৈঠক সারলেন এস জয়শঙ্কর। কথা বললেন কাশ্মীর প্রসঙ্গ নিয়েও।


উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে কেন্দ্র। উল্টে ভূ-স্বর্গকে দ্বিখণ্ডিত করে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ, এই দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে সরগরম ভারত-পাক সীমান্ত। যার আঁচ ইসলামাবাদ, দিল্লি ছাড়িয়ে পৌঁছেছে রাষ্ট্রপুঞ্জেও। সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেসও নিজের উদ্বেগ লুকিয়ে রাখেননি। কাশ্মীর ইস্যুতে বার্তা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। নজর রয়েছে চিনেরও। ভারতের প্রতিবেশী দেশ চিন কাশ্মীর ইস্যুতে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ভারতের ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত সার্বভৌমত্বে আঘাত করেছে। একই সঙ্গে তারা কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণের কথাও স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছে। চিন, ভারত-পাক দুই দেশকেই এই ইস্যুতে পুনর্বার বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে। যদিও ভারত আগেই জানিয়েছে, কাশ্মীর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে তৃতীয় কোনও মত শুনতে বাধ্য নয় ভারত। আমেরিকা হোক কিংবা চিন, কাশ্মীর নিয়ে কাউর নাক গলানোই ভাল চোখে দেখবেন না মোদি-শাহ-রা। এই পরিস্থিত জয়শঙ্করের চিন সফর স্বাভাবিকভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ।


দুই দেশের শীর্ষনেতার বৈঠক শেষে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী জানান, “দুই দেশের সংবেদনশীলতার ওপরই ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নির্ভরশীল।” একই সঙ্গে মোদি-জিনপিং বৈঠকের কথা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, “দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রই বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরছে। সেক্ষেত্রে মতভেদ হওয়া স্বাভাবিক। তবে দেশের শীর্ষনেতারা অতীতে সম্মত হয়েছেন, মতভেদ কখনই বিরোধের কারণ হবে না।” একই সুর শোনা যায় ওয়াং কাইশানের গলাতেও। তিনিও মোদি-জিনপিং পূর্ব আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, শীর্ষ নেতারাই পথ দেখিয়েছেন, সেই দিশাতেই এগিয়ে যাবে ভারত-চিন সম্পর্ক।


কাশ্মীর প্রসঙ্গে চিনা উপরাষ্ট্রপতি বলেন, “এ কথা সত্যি, সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আমাদের দুই দেশের মত আলাদা এবং আমারা সহজাতভাবেই নিজেদের মত আদান প্রদান করেছি।”