সৌমিক সাহা, লন্ডন: শরতে, শিউলিতে উমার আরাধনায় এবারও নজর কেড়েছে নর্থ লন্ডনের প্রভাতী সঙ্ঘের পুজো৷ ষষ্ঠীর বোধন থেকে সপ্তমীর নবপত্রিকা স্নান, অঞ্জলি, আরতি থেকে ভোগ-- সব কিছুই হল রীতি মেনে, নির্ঘণ্ট মেনে। আড়ম্বর নয়, আন্তরিকতাই এই পুজোর মূল বৈশিষ্ট্য৷


টেমসের তীরে দেবী দুর্গার আরাধনা৷ হোক না সে প্রবাস৷ আন্তরিকতা ও আয়োজনে কোনও খামতি নেই৷ দূর দেশে বসে পুজোর হাত ধরে খুঁজে পাওয়া দেশের মাটিকে৷ স্বাদ পাওয়া নিজের সংস্কৃতির।


২০১৬ সালে শুরু। করোনা আবহে গতবার পুজো হয়েছিল ছোট করে, এবার আবার সবাই জড়ো হয়েছেন এক জায়গায়। জমে উঠেছে উত্তর লন্ডনের প্রভাতী সঙ্ঘের পুজো৷ 


বোধন থেকে অধিবাস বা কলাবউ স্নান-- পাঁজি দেখে নির্ঘণ্ট মেনে হয় এই প্রবাসের পুজো৷ পুরোহিত তনয়কুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ছোটবেলায় দেওঘর রামকৃষ্ণ মিশনে ছিলাম। সেখানেই পুজো শিখেছি। ১৩ বছর ধরে পুজো করছি। নির্ঘণ্টের যতটা কাছাকাছি করা যায় করি। পুজোটাই মেন, কোনও কমপ্রোমাইজ করা হয় না। ভোগে গন্ধরাজ লেবুটাও দেওয়া হয়।


পুজোর এক উদ্যোক্তা নিরন্ত দেব বললেন, পুজোটা যদি করতে হয় তাহলে। শাস্ত্রে যে সময়ের উল্লেখ আছে সেটা মেনেই করা হয়। আচার-উপচারে কোনও ত্রুটি নেই। অঞ্জলি, আরতি থেকে মায়ের ভোগ। সব কিছুই প্রথা মাফিক। সব কিছুই হচ্ছে করোনা বিধি মেনে। 


পুজোর কটা দিন শুধুই আনন্দ৷ একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া৷ তুমুল আড্ডা৷ কখনও কখনও বয়স ভুলে ঢাকের তালে পা মেলানো৷


আরও পড়ুন: দিল্লির গ্রেটার কৈলাস টু এস ব্লকের পুজোয় নজর কেড়েছে আড়াই ফুটের দুর্গা প্রতিমা


আজ মহাষ্টমী। মণ্ডপে মণ্ডপে মাইকে চলছে স্তোত্রপাঠ৷ সাড়ম্বরে হচ্ছে দেবী বন্দনা। দিকে দিকে নেওয়া হচ্ছে পুষ্পাঞ্জলীর প্রস্তুতি। আজই বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কুমারী পুজোও হচ্ছে৷ দিকে দিকে দীপের আলোয় উমা বরণ চলছে।  আর দু’দিন বাকি পুজোর। উত্‍‍সবের সুরে ভাসতে প্রস্তুত তিলোত্তমা৷


মহাষ্টমী ও মহানবমীর মিলন মুহূর্তে সন্ধিপুজো৷ রীতি মেনে বাড়ি ও বারোয়ারি পুজোয় সন্ধিপুজো হয়। এই পুজোয় দেবীকে দেখানো হয় চামুণ্ডা রূপে। 


প্রতিমার উদ্দেশে অর্পণ করা হয় ১০৮টি পদ্ম ও ১০৮টি দীপ৷ কলকাতা থেকে কোচবিহার, মালদা থেকে মেদিনীপুর-সর্বত্রই সন্ধিপুজোর আচারে রীতি ও ঐতিহ্য অটুট৷ 


আরও পড়ুন: প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত চলে চণ্ডীপাঠ, পাঁচশো বছরের পুরনো গোঘাটের ফুলুই ঘোষবাড়ির পুজো