মোহন দাস, গোঘাট: প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত চণ্ডীপাঠ। নবপত্রিকা স্নান করাতে পালকির ব্যবহার। নিয়ম, নিষ্ঠা সহকারে এবারও মহাপুজোর আয়োজন হয়েছে হুগলির গোঘাটের ঘোষবাড়িতে। পুরোহিত নন, নবপত্রিকা স্নান করাতে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। পালকিতে চাপিয়ে হয় পুজোর আচার।
সাড়ে পাঁচশো বছরের পুরনো হুগলির গোঘাটের ফুলুই ঘোষবাড়ির দুর্গাপুজোর এটাই রীতি। পাঁচ শতক পেরিয়েও নিয়ম মানা হয় প্রথম দিনের মতো। এখানে প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত চলে চণ্ডীপাঠ।
কর্মসূত্রে, এই বনেদিবাড়ির অধিকাংশ সদস্যই থাকেন বহু দূরে। কিন্তু, পুজো এলেই প্রাণ ফেরে ঘোষবাড়িতে। পরিবারের সদস্য শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ বলেন, আমাদের বোধন বেলগাছের নীচে হয়,সপ্তমীর দিন মহাস্নানে পুকুরে যায়, ছটি ঘট ও নবপত্রিকা স্নান করে নিয়ে আসি, বংশের ছেলে কাঁধে করে নিয়ে আসে ঘট।
মাতৃ আরাধনায় যাতে ছেদ না পড়ে, তার জন্য এখন থেকেই ব্যবস্থা সেরে ফেলেছেন ঘোষবাড়ির সদস্যরা। পরিবারের সদস্য স্বপন ঘোষ বলেন, ট্রাস্ট গড়েছি যাতে আমরা থাকি বা না থাকি মায়ের পুজো হয়। কোনও শরিক দুর্বল হলে অন্য শরিক উঠে আসে। এটাই মায়ের মহিমা।
ভক্তি ভরে পুজোর পাশাপাশি, সামাজিক দায়বদ্ধতা বজায় রেখেছে ফুলুইয়ের ঘোষবাড়ি। নরনারায়ণ সেবা, দুঃস্থদের বস্ত্রদানের মাধ্যমে পুজো হয়ে উঠে সর্বজনীন।
আরও পড়ুন: অষ্টমী তিথিতে কুমারী ও সন্ধিপুজোর গুরুত্ব কেন বেশি?
আজ মহাষ্টমী। মণ্ডপে মণ্ডপে মাইকে চলছে স্তোত্রপাঠ৷ সাড়ম্বরে হচ্ছে দেবী বন্দনা। দিকে দিকে নেওয়া হচ্ছে পুষ্পাঞ্জলীর প্রস্তুতি।
আজই বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কুমারী পুজোও হচ্ছে৷ দিকে দিকে দীপের আলোয় উমা বরণ চলছে। আর দু’দিন বাকি পুজোর। উত্সবের সুরে ভাসতে প্রস্তুত তিলোত্তমা৷
মহাষ্টমী ও মহানবমীর মিলন মুহূর্তে সন্ধিপুজো৷ রীতি মেনে বাড়ি ও বারোয়ারি পুজোয় সন্ধিপুজো হয়। এই পুজোয় দেবীকে দেখানো হয় চামুণ্ডা রূপে।
প্রতিমার উদ্দেশে অর্পণ করা হয় ১০৮টি পদ্ম ও ১০৮টি দীপ৷ কলকাতা থেকে কোচবিহার, মালদা থেকে মেদিনীপুর-সর্বত্রই সন্ধিপুজোর আচারে রীতি ও ঐতিহ্য অটুট৷