নিবেদিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা : বৌবাজারের দত্তবাড়ির পুজোর ইতিহাস বহু প্রাচীন। নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে এই পরিবারে বিসর্জনের রীতি উত্তর কলকাতায় মুখে মুখে ফিরত। শতাব্দীপ্রাচীন বৌবাজারের দত্তবাড়ির পুজোয় ধূমধামও খুব । কালের নিয়মে পুজোর পরিধি ছোট হয়ে এলেও বৌবাজারের দত্তবাড়ির পরিচিতি আজও যথেষ্ট । সেই পরিবারের বংশধর ঋত্বিক দত্ত কর্মসূত্রে এখন কানাডায়। কলকাতার পুজোর সেই জাঁকজমক আজ আর নেই। একে একে পরিবারের সকলেই কর্মসূত্রে কলকাতা ছেড়েছেন। এখন আড়ম্বরবিহীন ভাবেই পূজিত হন দেবী দুর্গা।
কীভাবে শুরু
দত্ত পরিবারের বউ , পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা ঋতুপর্ণা দত্ত জানালেন, করোনা পরিস্থিতিতে যখন তাঁরা দেশে ফিরতে পারছিলেন না, পুজোর আগে মনটা ছটফট করছিল বাড়ির জন্য, তখনই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, বাড়িতে পুজোটা করতেই হবে। উত্তর কলকাতার দুর্গাদুর্গাপুজো" href="https://bengali.abplive.com/topic/vijayadashami" data-type="interlinkingkeywords">পুজোকে কানাডায় নিয়ে গেলেন দত্ত বাড়ির ছেলে। কলকাতা থেকে তড়িঘড়ি ফাইবার গ্লাস প্রতিমা আনিয়ে দত্ত বাড়ির পুজো শুরু হয় ২ বছর আগে।
দত্ত পরিবারের আদি বাড়ি মালদা | সেখান থেকে তাঁর বংশধর দত্তরা পরবর্তীতে বৌ বাজার এ বসবাস শুরু করেন । আনুমানিক ১৯৫০ সালে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়েছিল এই দত্তবাড়িতে। সেই ট্র্যাডিশনই এখন কানাডায় !
কানাডার বুকে যেন এক টুকরো কলকাতা
এ বছর সেই পুজো ৩ এ পা দিলো। ঢাক, কাঁসর ঘণ্টার শব্দ থেকে পুজোর হইহই আড্ডা, সবকিছুর মধ্যেই কলকাতার ট্র্যাডিশন ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়। ষষ্ঠী থেকে দশমী, পুজোয় বাদ যায় না কোনও আচার-অনুষ্ঠান। করোনার চোখরাঙানিতেও গত দু’বছর একেবারে নিষ্ঠা ভরে করা হয়েছিল পুজো। রীতি মেনে নবপত্রিকা স্নান, সন্ধিপুজো, সন্ধ্যা আরতি থেকে দর্পণ বিসর্জন সবই হয়। শেষ বেলায় হয় সিঁদুর খেলাও। এখন দত্ত পরিবারের পুজো সেখানে সর্বজনীন !
এ বছর দত্তদের বাড়ির পুজোর থিম চন্ডী মণ্ডপ থেকে ম্যাডক্স স্কয়ারে। সেজে উঠছে পুজো মণ্ডপ। খড়ের চালা দেওয়া চন্ডী মণ্ডপ সঙ্গে কাশ ফুলের সাজ তো আছেই। এবারও বাঙালি প্রাণের উৎসব মিলিয়ে দিয়েছে প্রবাসীদের। কলকাতার ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজো যেন কানাডায় হাজির।
কলকাতার আমেজ কানাডায়
দেদার আড্ডা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঙ্গে চপ-সিঙাড়া-ঘুঘনি-নারকেল নাড়ু-ফুচকার সমাহার কী নেই ! দত্তবাড়ির পুজো যেন কানাডার বুকে এক টুকরো কলকাতা।এভাবেই প্রবাসে বনেদি বাড়ির আমেজ ধরে রেখেছে কানাডার দত্তরা।