স্টুটগার্ট: ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। উৎসবের মেজাজে গোটা বাংলা। পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা বঙ্গবাসী। কোথাও সাবেকীয়ানা, কোথাও থিমের বাহার। কলকাতার (Kolkata) উত্তর থেকে দক্ষিণ, আলো ঝলমলে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন। সপ্তমীতে পুরোদমে পুজোর মুডে বাংলা (West Bengal)। তবে সদূর জার্মানিতে টাটকা পুজোর মেজাজ। আগরপাড়া থেকে যাওয়া ঢাকের বোলে মুখরিত পুজো প্রাঙ্গন। রীতি মেনে পুজোর আয়োজন স্টুটগার্টের দুর্গাপুজো।


পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা স্টুটগার্ট: ঢাকের তালে উৎসবের-সুর। আকাশে বাতাসে পুজোর গন্ধ ভরপুর। উৎসবের এই দিনে স্টুটগার্ট আর বাংলা যেন মিলেমিশে একাকার। স্টুটগার্টের প্রথম পুজো হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এই পুজো। মূল উদ্যোক্তা স্টুটগার্টের গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার। ১৯৯৫ সালে কুমোরটুলি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা। এখনও সেই প্রতিমাকেই আরাধনা করা হয়।  করোনা (Corona) পরিস্থিতি যে ছবি দেখা যায়নি, ২ বছর পর ফের সেজে উঠেছে স্টুটগার্ট। উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়া থেকে এবছর ঢাক গিয়েছে স্টুটগার্টের এই পুজোতে। সাবেকীয়ানাকে মাথায় রেখেই সাজানো হয় প্রতিমা। পুজোর ৫ দিন থাকে নানারকম ভোগের আয়োজন। এই পুজোর মূল উদ্যোক্তা তিমির গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “১৯৯৫ সালে আমার বাবার হাত ধরে এই পুজো শুরু হয়। স্টুটগার্টের প্রথম পুজো। এখানে থিমের প্রচলন নেই। কমিউনিটি হলে পুজোর আয়োজন করে থাকি। সাবেকীয়ানার ছোঁয়া থাকে পুজোয়। আগরপাড়া থেকে ঢাক নিয়ে এসেছি। এই পুজোতে আমার মা এবং স্ত্রীর একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। তাঁদের ছাড়া এই পুজোটা হতোই না।’’ পুজো মানেই মাতৃ আরাধনার পাশাপাশি খাওয়া দাওয়াও রয়েছে। মা দুর্গাকে ভোগ দেওয়া হবে বাড়িতে তৈরি মিষ্টি, লুচি, পোলাও দিয়ে। সপ্তমী-অষ্টমী থাকছে কলকাতার স্ট্রিট ফুড।


প্রাণের উৎসবের আয়োজন: পুজো মানেই মিলনোৎসব। বাংলার প্রাণের উৎসব হয়ে উঠেছে বিশ্বজনীন। এই বাংলার মাটি থেকে কয়েকমাইল দূরে স্টুটগার্টে যেন লুকিয়ে আছে আরেক বাংলা। প্রবাসের সিংহভাগ পুজোই মূলত হয় সপ্তাহান্তে। কিন্তু স্টুটগার্টের পুজোর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বাংলারই আবেগ, উন্মাদনা। বাংলার পুজো মানেই কেনাকাটার ধুম, কুমোরটুলির প্রস্তুতি থেকে আলোর রোশনাই, ঢাকের বোল। কিন্তু এসবের থেকে অনেকটাই দূরে স্টুটগার্টের প্রবাসী বাঙালিরা। প্রতি বছর বাংলার পুজো দেখার সুযোগও হয় না। অথচ পুজোর দিনগুলিতে মনখারাপের সুর আরও বেশি করে কড়া নেড়ে যায়। কর্মব্যস্ত জীবন সামলে আজ থেকে প্রায় ২৮ বছর প্রথম পুজোর আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।


কীভাবে শুরু হয়েছিল পুজো? ১৯৯৫ সালে এই দুর্গাপুজোর সূচনা করেন স্টুটগার্ট নিবাসী তুষার কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর এই পুজোর দায়িত্বে তাঁর ছেলে তিমির কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। করোনার জন্য দুবছর পুজোর পৌরহিত্য করেছেন তিমির নিজেই।  এবছর এই পুজো পদার্পণ করছে ২৮ তম বর্ষে। গতকাল থেকেই মহা সমারোহে দেবীর আরোধনা শুরু হয়েছে। নিয়ম মেনে ৫ই অক্টোবর পুজো হবে প্রবাসে। এবছরের পুজোর পৌরহিত্য করতে পুরোহিত আসছেন জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে। পুজোয় প্রতিবার দর্শক আগমন হয় ফ্রান্স,পোলান্ড, নেদারল্যান্ড,অস্ট্রিয়া সহ বেশ কিছু পড়শী দেশ থেকে।


আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: ব্রাসেলসের আকাশে আগমনী সুর, মাতৃ আরাধনার প্রস্তুতিতে 'তেরো পার্বণ'