ওয়াশিংটন: রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে (Russia Ukraine War) কাটাছেঁড়া চলছে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে। তার মধ্যেই নজিরবিহীন পদক্ষেপ ‘স্পেসএক্স’ (SpaceX) সিইও ইলন মাস্কের (Elon Musk)। মুহুর্মুহু বোমা, গুলি, ক্ষেপণাস্ত্রে যখন ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ইউক্রেন-সহ পূর্ব ইউরোপের একাধিক দেশে, সেই সময় ইউক্রেন জুড়ে ‘স্পেসএক্স’-এর স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করে দিলেন তিনি।  


যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার মাস্কের সাহায্য চেয়েছিলেন ইউক্রেনের উপ প্রধানমন্ত্রী মিখাইলো ফেদরভ (Mykhailo Fedorov)। টুইটারে মাস্ককে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, ‘মঙ্গল গ্রহে উপনিবেশ গড়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন আপনি। এ দিকে, ইউক্রেন দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়া। আপনার রকেটের সফল অবতরণ হচ্ছে যেমন, তেমনই রুশ রকেট আছড়ে পড়ছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের উপর। রাশিয়ার সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ যাতে এই সময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে একজোট হন, তার জন্য ইউক্রেনকে স্টারলিঙ্ক স্টেশনের পরিষেবা দেওয়ার অনুরোধ রইল আপনার কাছে।’’  


তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনের জন্য নিজের সংস্থার স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালুর কথা ঘোষণা করলেন মাস্ক। ফাইবার অপটিক কেবলের তার এবং সেল টাওয়ারও যেখানে পৌঁছতে পারে না, মাস্কের সংস্থার স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড সেখানে নির্বিঘ্নে পরিষেবা দিতে সম্ভব। বিপর্যয়ের সময় এই পরিষেবা অত্যন্ত কার্যকর। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জন্য এ বার সেই পরিষেবা চালু করে দিলেন মাস্ক। খুব শীঘ্র তাঁর সংস্থা আরও কৃত্রিম উপগ্রহ ছাড়বে বলেও জানিয়েছেন মাস্ক, যাতে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিতে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ চালু থাকে।  



আরও পড়ুন: Russia Ukraine Conflict: 'সুইফট' থেকে বাদ রাশিয়া, টান পড়বে পুতিনের তহবিলে?


পৃথিবীর সর্বত্র স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে মাস্কের। বর্তমানে তাঁর সংস্থার ২ হাজারের বেশি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাদের ইন্টারনেট সংয়োগ অত্যন্ত দ্রুত পরিষেবা প্রদান করে। তার মাধ্যমে বিপর্যয়ের সময়ও ভিডিয়ো কল, ওয়েব কল, অনলাইন গেম, সম্প্রচার চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। সম্প্রতি সমুদ্রগর্ভস্থ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ঢেকে যাওয়া টঙ্গাকেও ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করেছিল মাস্কের ‘স্পেসএক্স’ সংস্থা।


যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শুধু ইন্টারনেট সংযোগই বিচ্ছিন্ন হয়নি ইউক্রেনের, টান পড়েছে পানীয় জলের জোগানেও। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ভাঁড়ারেও টান পড়েছে। তা থেকে বেরিয়ে আসতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় ইতিমধ্যেই আগ্রহ দেখিয়েছে ইউক্রেন। তার পরে কিভ থেকে সরেনি রুশ সেনা। বরং রুশ রকেট কিভের প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন, তেলের ডিপো ধ্বংস করে দিয়েছে। এই মুহূর্তে ইউক্রেনের পূর্ব এবং দক্ষিণ অংশেই রুশ সেনার দাপট সবচেয়ে বেশি। তবে পিছু হটার পরিবর্তে চারিদিক থেকে ইউক্রেনকে পুরোপুরি কবজা করে ফেলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্রেমলিন।