নয়াদিল্লি:  সম্প্রতি মার্কিন পরমাণু বিজ্ঞানী হ্যানস ক্রিসটেনসেন এবং রবার্ট নরিস পাকিস্তানকে বিক্রি করা মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ববিমান সম্পর্কে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছে তাঁদের বইয়ে। গুগুলের উপগ্রহ চিত্রে ধরা ছবি ও বিভিন্ন গুপ্তচর সংস্থার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানকে বিক্রি করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান, মার্কিন জেট এবং পাক বায়ুসেনার ফ্রেঞ্চ মাইরেজ এখন পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম।


মার্কিন বিজ্ঞানী হ্যানস ক্রিসটেনসেন যিনি ‘নিউক্লিয়ার নোটবুক অন পাকিস্তান নিউক্লিয়ার ফোর্সেস’-এর সহ লেখক, জানিয়েছেন, এই তথ্য জানার পরও কৌশলগত কারণেই পাকিস্তানকে অস্ত্র বিক্রি করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নিউক্লিয়ার ইনফরমেশন প্রজেক্টের ডিরেক্টর জানিয়েছেন, মার্কিন প্রশাসন চাইলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এর জন্যে জরুরি পদক্ষেপ নিতে পারে, কিন্তু এখন এরকম কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে না সেখানকার প্রশাসন।

বিজ্ঞানীদের দাবি, মনে করা হচ্ছে এফ-১৬ হল পাকিস্তানের অস্ত্রভাণ্ডারে প্রথম যুদ্ধবিমান যেটা পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি ফ্রেঞ্চ মাইরেজকেও উন্নত করা হয়েছে প্রযুক্তিগতভাবে।কিন্তু সবকিছু জেনেও, মার্কিন প্রশাসন চুপ করে রয়েছে এবং মনে করে, এটা একান্তভাবেই পাকিস্তানের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত তারা এই বিমান কীভাবে ব্যবহার করবে।
তবে যেটা আন্তর্জাতিক মহলকে ভাবাচ্ছে সেটা হল, সম্প্রতি পাকিস্তানের অস্ত্রভাণ্ডারে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠী। এবং কোনওভাবে যদি এই অস্ত্র ভুল হাতে চলে যায়, তাহলে সেটা বিশ্বের পক্ষে বড় চিন্তার কারণ।

হ্যানস ক্রিসটেনসেন জানিয়েছেন, গুগুলের উপগ্রহ চিত্রের ধরা পড়া ছবি থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন, পাকিস্তানে এইমুহূর্তে পাঁচটি পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম মিসাইল বেস রয়েছে। এর থেকে বোঝা যায় এইমুহূর্তে ভারতের এই প্রতিবেশী রাষ্ট্র পারমাণবিকভাবে কতটা শক্তিশালী। পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে আক্রোতে, গুজরানওয়ালায়, খুজদারে, পানো আকিল এবং সারগোধায়। বিজ্ঞানীদের দাবি ষষ্ঠ অস্ত্রভাণ্ডারটি তৈরি হচ্ছে ভাওয়ালপুরে এবং সপ্তমটি তৈরি হবে দেরা গাজি খান এলাকায়। কিন্তু গুজরানওয়ালায় যে পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে, তা ভারতের জন্যে বেশি চিন্তার, কারণ, এখানে পাকিস্তানি তালিবানরা যথেষ্ট সক্রিয় এবং অস্ত্র ভাণ্ডারে সকলে ঢুকতেও পারে।

তাহলে কী বলা যেতে পারে পাকিস্তানের ওপর এখন কোনও দেশ যদি পারমাণবিক হামলা চালায়, তাহলে কী পাক সেনাবাহিনী প্রত্যাঘাত করতে প্রস্তুত? এর উত্তরে বিজ্ঞানী ক্রিসটেনসেন জানিয়েছেন, এখনও পাকিস্তান সম্পূর্ণভাবে পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত না হলেও, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। পাকিস্তান শুধু প্রত্যাঘাত আনতেই সক্ষম হবে না, চাইলে ছোট পরিসরের মিসাইল হানা চালাতেও সক্ষম হবে। তবে এধরনের মিসাইল হামলায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে পাকিস্তানই ভারতের চেয়ে, দাবি বিজ্ঞানীদের।