শ্রীলঙ্কা পুলিশের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইল্লামকে এর আগে গ্রেফতার করে পুলিশ, পরে ছেড়ে দেয়। সিন্নামন গ্র্যান্ড হোটেলে সে একটি বিস্ফোরক বস্তু ফাটিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে ভয়ঙ্করতম নাশকতার পিছনে জড়িত মানববোমারা সবাই সম্পন্ন পরিবারের সদস্য, উচ্চশিক্ষিত, তাদের একজন এমনকী ব্রিটেনে পড়াশোনা করেছে বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুয়ান বিজয়বর্ধনে। ৯জন মানববোমার ৮ জনকেই শনাক্ত করা হয়েছে। নবম মানববোমা বাকিদের কারও একজনের স্ত্রী বলে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
ইসলামিক স্টেট দায় নিলেও তিন ক্যাথলিক গির্জা ও তিন বিলাসবহুল হোটেলে রবিবারের হামলার জন্য দেশেরই ইসলামি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ন্যাশনাল তৌহিদ জামাতকে (এনটিজে) দায়ী করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। রবিবারের নাশকতার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে শ্রীলঙ্কার ফৌজদারি তদন্ত শাখা ও সন্ত্রাসবাদ তদন্ত বিভাগ সারা দেশে ৫টি সেফ হাউস অর্থাত্ নিরাপদ ঘাঁটিতে তল্লাসি চালিয়েছে।
দ্বীপরাষ্ট্রে নজিরবিহীন নাশকতায় তদন্তে সামিল হয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। ৬টি বিদেশি পুলিশ এজেন্সি ও ইন্টারপোলও স্থানীয় পুলিশকে সাহায্য করছে। নেমেছে ইন্টারপোল, এফবিআই-ও।
এর মধ্যেই শ্রীলঙ্কা পুলিশ ইস্টারের দিনের নাশকতার পর একের পর এক তল্লাসি অভিযানে আজ তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার হয়েছে ২১টি কম ক্ষমতাসম্পন্ন হাত গ্রেনেড, ৬টি তরবারি। ডেইলি মিরর-এর খবর, কলম্বোর ক্রাইম ডিভিশন, স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের লোকজন কলম্বোর মোদারায় অভিযান চালায়। একটি ভ্যানও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর সাহায্যে অভিযানের তেজ তীব্র করেছে শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ, আরও ১৬ সন্দেহভাজনকে গ্রেফতারও করেছে। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘে বলেছেন, তাঁরা এবার ‘স্লিপারদের’, অর্থাত্ আরেক দফা বোমা হামলা চালাতে পারে যারা, টার্গেট করছেন। শ্রীলঙ্কায় আরও হামলা হতে পারে। স্লিপারদের ওপর দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি নজর রাখছে, তবে হামলা ঘটার আগে তাদের ধরে জেলে পোরার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সরকারের হাতে নেই।
এর মধ্যেই শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্ডো ইস্তফা দিলেন। আগাম গোয়েন্দা হুঁশিয়ারি থাকা সত্ত্বেও নাশকতা ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য তাঁকে ও পুলিশের আইজি পুজিথ জয়সুন্দরকে সরতে বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট মৈতিরিপালা সিরিসেনা।