কাবুল : বাস্তবের রুক্ষ পরিহাসে স্বপ্নের অপমৃত্যু। তালিবানি অত্যাচারের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন। তালিবানের রাইফেল থেকে রক্ষা পেতে আঁকড়ে ধরেছিলেন C-17 বিমানের গিয়ার বক্স। কিন্তু মাঝ আকাশে হাওয়ার তীব্র ঝাপটায় খুলে যায় হাতের মুঠো। আমেরিকার বায়ুসেনার বিমান থেকে পরপর ৩ জনকে পড়ে যেতে দেখেছে বিশ্ব। হতভাগ্য সেই ৩ জনের মধ্যে একজন জাকি আনওয়ারি। আফগানিস্তানের জাতীয় যুব ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করেছেন জাকি। কিন্তু তালিবানদের আফগানিস্তান দখলের জেরে মাত্র ১৯ বছরেই একটি স্বপ্নের মৃত্যু।
কাবুলের গাজি ন্যাশনাল স্টেডিয়াম যার ড্রিবলের ছন্দে মেতে উঠত, সেই ‘প্রমিসিং’ জাকির কী নিদারুণ পরিণতি। দু’দিন আগেই বিমান থেকে পড়ে ১৭ বছরের রেজা আর তার ১৬ বছরের ভাই কবীরের মর্মান্তিক পরিণতির কথা জানা গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার চিহ্নিত করা গিয়েছে আফগান জাতীয় যুব ফুটবল দলের সদস্য জাকিকে। জাকি আনওয়ারির মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই উদবেগ-উৎকন্ঠার মাঝে শোকের আবহ। যে শোক শুধু আটকে নেই ক্রীড়ামহলে। সংক্রামক হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে আফগানিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে গোটা বিশ্বে।
এদিকে, তালিবানি ফতোয়ার ভয়ে দেশ ছেড়েছেন আফগানিস্তানের প্রখ্যাত পপ তারকা আরিয়ানা সঈদ। ২০১৫-তে আফগানিস্তানের ঘরোয়া ফুটবল লিগের থিম সং গেয়েছিলেন যিনি, সেই আরিয়ানাই এখন দেশ ছাড়া। মার্কিন বায়ুসেনার বিমানে বসে সেই ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে পোস্ট করেছেন আরিয়ানা সঈদ। গত এক বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে। ইনস্টাগ্রামে ১৩ লক্ষ ভক্তের কাছে আফগান পপ তারকা জানিয়েছেন, দুঃস্বপ্নের কয়েক রাত কাটানোর পরে আপাতত ভালো আছি। বেঁচে আছি। দোহায় পৌঁছেছি। ইস্তানবুলের বিমানের জন্য অপেক্ষা করছি। ভালো থাকুন। ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
তালিবান এতটাই ভয়ঙ্কর, যে ভিটেমাটি ছেড়ে ভিনদেশে পালাবার আগে দু’দণ্ডও ভাবছেন না আফগানরা। স্বাধীনতা দিবসেও দেখা গেছে মরিয়া হয়ে দেশ ছেড়ে পালাবার সেই ছবি।