ওয়াশিংটন: আগামী চার মাসের মধ্যে আমেরিকায় পোলিও-জাতীয় রোগ অ্যাকিউট ফ্ল্যাকসিড মাইলাইটিস (এএফএম)-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। এই মর্মে দেশের সব স্বাস্থ্যকর্মী ও সন্তানদের অভিভাবকদের সতর্ক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই কথা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)। 


ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিশুদের মধ্যে আচমকা অঙ্গ দুর্বলতা প্রত্যক্ষ করলে, বিশেষ করে অগাস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যে, তাহলে তা অ্যাকিউট ফ্ল্যাকসিড মাইলাইটিস হতে পারে বলে ধরে নিতে হবে অভিভাবক ও চিকিৎসকদের। 


সাম্প্রতিককালে, শিশুদের শ্বাসজনিত অসুস্থতা বা জ্বর এবং ঘাড়ে বা পিঠের ব্যথা বা কোন স্নায়বিক উপসর্গ দেখা দিলে তা উদ্বেগের বিষয়। কারণ তা অ্যাকিউট ফ্ল্যাকসিড মাইলাইটিস (এএফএম) হতে পারে। অভিভাবক থেকে চিকিৎসক-- সকলকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।


এই মুহূর্তে এএফএম মেডিক্যাল জরুরি অবস্থার সামিল। রোগীদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু করা উচিত। এমনকি কোভিড প্রাদুর্ভাব অঞ্চলগুলিতেও অবিলম্বে স্বাস্থ্য পরিষেবার দ্বারস্থ হওয়া উচিত। 


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় শারীরিক দূরত্ববিধি মানার জন্য চলতি বছর অ্যাকিউট ফ্ল্যাকসিড মাইলাইটিসের প্রাদুর্ভাব বিলম্বিত হয়ে অগাস্ট মাস ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে, যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, এবছর এখনও পর্যন্ত সংক্রমণের সংখ্যাটা ততটা বাড়েনি। 


অ্যাকিউট ফ্ল্যাকসিড মাইলাইটিস  বা এএফএম হলো একটি স্নায়বিক রোগ, যার ফলে, শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ২০১৪ সাল থেকে প্রতি দুবছরে একবার করে অ্যাকিউট ফ্ল্যাকসিড মাইলাইটিস হানা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। 


২০১৮ সালে এই রোগের সবচেয়ে বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল। সেবার ৪২টি প্রদেশে ২৩৮ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্তদের ৯৫ শতাংশই শিশু। 


শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে জরুরি বিভাগে কর্মরত প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মী ও মেডিক্যাল সেন্টারগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দ্রুত এএফএম-এর উপসর্গ চিহ্নিতকরণ এবং রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করার জন্য প্রস্তুত থাকতে। 


এখনও পর্যন্ত এই রোগের কোনও প্রতিকার বা চিকিৎসা নেই। তাই রোগ নির্ণয় দ্রুত হলে, উপসর্গগুলির চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে। ফলে, থেরাপির মাধ্যমে আক্রান্তদের পক্ষাঘাতগ্রস্ত হাত ও পা পুনরায় সচল করতে তা সাহায্য করবে।