বার্লিন: রোগীদের সঙ্গে দিনরাত ওঠা বসা একঘেয়ে হয়ে গিয়েছে। তাই জীবনে বৈচিত্র্য আনতে আইসিইউতে থাকা মুমূর্ষু রোগীদের বিষ ইঞ্জেকশন দিতেন জার্মানির পুরুষ নার্স নিলস হোয়েজেল। তদন্ত বলছে, এভাবে অন্তত ১০৬ কে খুন করেছেন তিনি, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বই কমবে না।


উত্তর বার্লিনের দুটি হাসপাতালে ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত কাজ করেন নিলস। একঘেয়ে কাজ করতে করতে যখন বিরক্ত লাগত, তখন রোগীদের তিনি বিষাক্ত ইঞ্জেকশন দিতেন। তাতে তাঁদের হার্ট ফেল হত বা শ্বাস বন্ধ হয়ে যেত। সে সময় তাঁদের বাঁচাতে চেষ্টা করতেন তিনি। আর কখনও কাউকে বাঁচাতে পারলে যে আনন্দ হত, তাতে একঘেয়েমি কেটে যেত। অন্যান্য নার্স, ডাক্তারদের কাছে বাহবাও নিতে পারতেন। আবার না পারলে ভেঙে পড়তেন, সবটাই ছিল ওই জীবন মরণ খেলার অঙ্গ।

২০০৫ সালে নিলসের কার্যকলাপ ধরা পড়ে যায়। এক মহিলা নার্স তাঁকে রোগীকে বিষ ইঞ্জেকশন দিতে দেখে ফেলেন। রোগী বেঁচে যান, নিলসকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৮-এ একাধিক রোগীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে সাড়ে সাত বছর জেল হয় তাঁর।

বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে জানাজানি হলে এক মহিলা পুলিশে অভিযোগ করেন। তাঁর সন্দেহ, তাঁর মুমূর্ষু মা ওই নার্সের শিকার হয়েছেন। এরপর বহু রোগীর দেহ কবর থেকে তুলে শরীরে একই ওষুধের খোঁজ মেলে। ২০১৫-য় ওই নার্সকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু ততদিনে পরিষ্কার, আরও বহু রোগীকে খুন করেছেন তিনি, তাঁর নিজেরও মনে নেই, ঠিক কতজন তাঁর শিকার হয়েছেন। ফলে তদন্তকারী অফিসাররাও মনে করছেন, নিলসের হাতে মৃত রোগীদের ঠিক সংখ্যাটা তাঁরা কখনও জানতে পারবেন না।

তাঁর ডিউটি চলাকালীন একের পর এক রহস্যময় মৃত্যু ঘটলেও সময়মত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়া হাসপাতাল আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও বিচার চলছে।

পুলিশের আশা, আগামী বছরের শুরুতেই নিলসের বিরুদ্ধে আরও নতুন অভিযোগ আনতে পারবে তারা।