কুয়ালালামপুর: ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন বিতর্কিত ইসলামি প্রচারক জাকির নায়েক। গতমাসেই মালয়েশিয়ার একটি মজসিদে অনুরাগীদের ভিড়ে দেখা গিয়েছিল জাকিরকে। অনুরাগীদের টেলিভিশনে গোঁড়া ইসলামের প্রচারকের সঙ্গে সেলফি তুলতেও দেখা যায়।  এ ধরনের গোঁড়া মতামত প্রচার করে সন্ত্রাসবাদে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে ভারতে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ভারত তাঁকে ফেরার ঘোষণা করেছে। গত সপ্তাহেই এনআইএ তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে। এনআইএ জানিয়েছে, প্রকাশ্যে বক্তৃতা ও ভাষণের মাধ্যমে জাকির সন্ত্রাসবাদে মদত ও বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজ করেছেন।


ব্রিটেনও তাঁকে নিষিদ্ধ করেছে।

সেই জাকির এখন মালয়েশিয়াতে রয়েছেন বহাল তবিয়তে। তাঁকে মালয়েশিয়ার স্থায়ীভাবে বসবাসের অধিকার দেওয়া হয়েছে। কুয়ালালামপুরের যে মসজিদে তাঁকে দেখা গিয়েছে সেখানে প্রায়ই আসেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা।

মালয়েশিয়ায় সরকারের ওপর মহলের তাঁর প্রতি সমর্থন বেশ স্পষ্ট।

৫২ বছরের জাকির তাঁর গোঁড়া মতবাদ প্রচারের মাধ্যমে বিতর্ক তৈরি করেছেন। তিনি সমকামীদের মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সওয়াল করেন। আবার কুখ্যাত জঙ্গি ওসামা বিন লাদেনকেও সমর্থন করতে পিছপা হননি।

ঢাকার গুলশন বাগে জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশে জাকিরের পিস টিভি-র সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঢাকার জঙ্গি হামলায় জড়িতরা তাঁর বক্তৃতা শুনেই অনুপ্রাণিত হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়।এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পিস টিভির প্রচার বন্ধ করে। ঢাকার ওই হামলায় দায়স্বীকার করে আইএস।

মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদির দাবি, পাঁচ বছর আগে দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অধিকার পেয়েছেন জাকির। তাঁকে কোনও বিশেষ সুবিধা দেওয়া দেওয়া হচ্ছে না।

জাহিদ আরও বলেছেন, জাকির কোনও আইন বা বিধি ভঙ্গ করেননি। তাই তাঁকে গ্রেফতার বা আটক করার কোনও কারণ নেই। তাঁর আরও দাবি, সন্ত্রাসবাদে তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে ভারতের কাছ থেকে কোনও সরকারি অনুরোধ আসেনি।

জাহিদ ও প্রধানমন্ত্রী দুজনেই গত বছরে জাকিরের সঙ্গে তাঁদের বৈঠকে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

অন্যদিকে, মালয়েশিয়ার একটি গোষ্ঠী জাকিরকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। ওই গোষ্ঠীর যুক্তি, বহু জাতি নিয়ে গড়ে ওঠা মালয়েশিয়ার সমাজের পক্ষে জাকির একটা বিপদ।

মালয়েশিয়ার বিরোধী দল ইসলামিক পার্টি জাকিরের পাশেই দাঁড়িয়েছে।  ভারতের কাছ থেকে কোনও প্রত্যর্পনের অনুরোধ হলে তাতে কর্ণপাত না করার আর্জি তারা সরকারের কাছে জানিয়েছে।