নিউইয়র্ক: সময়টা গত জানুয়ারি। করোনাভাইরাসের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে চিনের উহান। কিন্তু তখনও সেখানে পুরোপুরি জারি হয়নি লকডাউন। ওই সময় উহান থেকে আসা একটি পরিবারের সদস্যরা গুয়াংঝাউয়ের একটি রেস্তোঁরায় নৈশভোজ সেরেছিল। ওই পরিবারের একজন অজান্তেই করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। কয়েকদিন পর ওই রেস্তোরাঁয় অন্যান্য যাঁরা নৈশভোজে গিয়েছেলেন, তাঁরাও ভাইরাস আক্রান্ত হতে শুরু করেন। ভাইরাস রেস্তোরাঁর এয়ার কন্ডিশনারের ডাক্টের মধ্যে দিয়ে গিয়ে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল আশেপাশে বসে থাকা তিনটি পরিবারের সদস্যেদর মধ্যে। আর সবচেয়ে বড় কথা একে অপরের সংস্পর্শে আসেনি ওই পরিবারগুলি। ওই দিন নৈশভোজ করতে আসা অন্যান্য ৭৩ জন ও রেস্তোরাঁর কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ায়নি। চিনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনর একটি গবেষণাপত্রে ওই কৌতূহলোদ্দীপক ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একটি পরিবারের আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে তিনটি পরিবারের মধ্যে।


গত ২৪ জানুয়ারি ওই পরিবার গুয়াংঝাউয়ের রোস্তোঁরা-তে নৈশভোজ করেছিল। এরপরের দিনই এক পরিবারের ৬৩ বছরের এক সদস্যের কাশি ও জ্বর হয়। ওই বৃদ্ধার পরে করোনাভাইরাস টেস্ট পজিটিভ আসে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে. দুই সপ্তাহের মধ্যে ওই রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ করেছিলেন, এমন নয়জনেরও পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। ওই ভাইরাস ছিল উহানের পরিবারের এক সদস্যের মধ্যে। দুই পরিবারের যাঁদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল তাঁরা উহানের পরিবার যে টেবিলে বসেছিল, তার উভয় দিকের টেবিলে বসেছিলেন।

চিনের বিশেষজ্ঞরা গবেষণার উপসংহারে জানিয়েছেন, পারস্পরিক সম্পর্কহীন এই পরিবারগুলির সদস্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল রেস্তোরাঁ থেকেই। সেখানে তারা উহান থেকে আসা পরিবারের থেকে কিছুটা দূরে প্রায় এক ঘন্টার মতো ওই রেস্তোরাঁয় ছিলেন।

তৃতীয় পরিবারের টেবিলের ওপরে থাকা একটি এয়ার কন্ডিশনার দক্ষিণমুখে তিনটি টেবিলে হাওয়া ঠেলছিল, যা একটি দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসছিল।
জানুয়ারিতে উহানের বাইরে সংক্রমণ ছড়ায়নি। গবেষকরা মনে করছেন, উহানের পরিবারই বাকি দুটি পরিবারের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।