সন্দীপ সরকার, কলম্বো: পাহাড়, চা-বাগান, ঝর্না আর সুনীল সফেন সমুদ্র! শ্রীলঙ্কা (sri lanka) মানে তো প্রকৃতির নানা দিকের যুগলবন্দি। কিন্তু কোথায় কী? অস্থির দ্বীপরাষ্ট্রে এখন খাদ্য সমস্যার সঙ্গে যুঝছেন অন্তত ৬০ লক্ষ মানুষ! এর মধ্যে অন্তত ৬০০টি ভারতীয় (indian) পরিবার রয়েছে। বাঙালি (bengali)? হ্যাঁ, সেও রয়েছে। সংখ্যাটা ৫০।
কেমন আছেন ওঁরা?
জয়দ্রথ দাস। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার আধিকারিক। কাজের সূত্রে কলম্বোয় থাকেন। কী ভাবে দিন কাটছে? এবিপি আনন্দকে জানালেন এই নেই-রাজ্যের কথা। গ্যাস নেই, তেল নেই, বাজারে জিনিসপত্র নেই। বলছেন জয়দ্রথ। কার্যত একসুর রঞ্জন চক্রবর্তী। আদতে দক্ষিণ কলকাতার অজয়নগরের বাসিন্দা হলেও গত ২৩ বছর ধরে কলম্বো শহরেই রয়েছেন। কিন্তু শেষ কয়েক দিন যে অভিজ্ঞতা তাঁর হয়েছে, তার ভেবেই শিউরে উঠেছেন প্যাকেজিং সংস্থার কর্ণধার রঞ্জন। বললেন, 'অর্থের কোনও মূল্য নেই।...গোটাটার জন্য এই সরকার দায়ী।' গড়িয়ার বোয়ালিয়ার সুরজিৎ সিন্হাও গত ৬ বছর ধরে কলম্বোয় আছেন। এক টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থার কর্তা তিনি। চারপাশে যা চলছে দেখে রীতিমতো হতাশ সুরজিৎ। বললেন, 'ভীষণ সমস্যার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। কিছু করার নেই। অথচ দেশটা কিন্তু সুন্দর।' চূড়ান্ত সঙ্কটের মুহূর্তের শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছে প্রবাসী বাঙালিদের সংগঠন 'কলম্বো এক্সপ্যাটস কালচারাল অ্যাসোয়িয়েশন।' সে দেশের ৩৭৯টি অনাথ আশ্রমে থাকা ১০ হাজার ৬০০ শিশুর ১০০ দিনের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে সংগঠনটি। ইতিমধ্যেই পর্যাপ্ত চাল, ডাল, আলু নিয়ে কলকাতা থেকে রওনা দেওয়া জাহাজটি কলম্বোয় পৌঁছে গিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি, ক্যাপ্টেন অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানালেন, 'এখানে এত জিনিস পেতাম না। কলকাতা থেকে আনিয়েছি। শ্রীলঙ্কার মুদ্রায় প্রায় ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।' শনিবার ডিপার্টমেন্ট অফ প্রোবেশন অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ারের কমিশনার তনুজা দিশানায়েকের উপস্থিতিতে ভারতীয় হাই কমিশনের তরফে শ্রীলঙ্কার সরকারের হাতে সেই ত্রাণসামগ্রী তুলেও দেওয়া হয়। কিন্তু পুরনো অবস্থায় কবে ফিরবে শ্রীলঙ্কা? উত্তর নেই।
কী পরিস্থিতি দ্বীপরাষ্ট্রে?
গ্যাস থেকে জ্বালানি, সব কিছুরই হাহাকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম তুঙ্গে। সরকার-বিরোধী ক্ষোভের আগুন চরমে ওঠে গত সপ্তাহে। চাপের মুখে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে শেষমেশ পদত্যাগ করেছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। কিন্তু এর পর কী? নতুন যে ও যাঁরা নির্বাচিত হয়ে আসছেন, তাঁরা কি দেশের পরিস্থিতি সামলে উঠতে পারবেন আদৌ? সংশয় থাকছেই।
আরও পড়ুন:কলকাতায় মারাত্মক হারে বাড়ছে বায়ু দূষণ, নিয়ন্ত্রণে তত্পর কলকাতা পুরসভা