দ্য হেগ(দ্য নেদারল্যান্ডস): জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গিহানার পর ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আর এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীর থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে দুদেশের মধ্যে আইনি চাপানউতর ফের নতুন করে শুরু হতে চলেছে। সোমবার থেকে দ্য হেগ শহরে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে শুরু হচ্ছে কুলভূষণ যাদবের শুনানি প্রক্রিয়া। চলবে চারদিন। সেখানে উভয় দেশ নিজ নিজ যুক্তি পেশ করবে। যা ঘিরে দুই প্রতিবেশি রাষ্ট্রের মধ্যে কথার আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হবে বলেই মনে করছে ওাকিবহাল মহল।
২০১৭ সালের এপ্রিলে অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় নৌসেনা অফিসার বছর আটচল্লিশের কুলভূষণ যাদবকে চরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাকিস্তানের সামরিক আদালত। পাক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে মে মাসে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের দ্বারস্থ হয় ভারত। নয়াদিল্লির আবেদন সাড়া দিয়ে আইসিজে-র ১০ সদস্যের বেঞ্চ পাকিস্তানকে নির্দেশ দেয় কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখতে।
পাশাপাশি ভারতের তরফে এ-ও অভিযোগ করা হয়, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কুলভূষণকে কনস্যুলার অ্যাকসেস দিতে রাজি হচ্ছে না পাকিস্তান। সবকিছু নিয়ে দুপক্ষের যুক্তি-তর্ক শুনতে আগামী ১৮-২১ ফেব্রুয়ারি সময় নির্ধারিত করে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত।
জানা গিয়েছে, ভারতের হয়ে সওয়াল করবেন সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালভে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করবেন খওয়ার কুরেশি। শুনানিতে প্রথমে ভারত তার যুক্তি পেশ করবে। পরের দিন, অর্থাৎ ১৯ তারিখ সওয়াল করবে পাকিস্তান। এরপর ভারত জবাব দেবে ২০ তারিখ এবং পাকিস্তানের জবাবদিহি হবে ২১ তারিখ। ২০১৯-এর মাঝামাঝি সময়ে রায় ঘোষণা করতে পারে আইসিজে।
২০১৬-র মার্চে ইরান থেকে তাদের ভূখণ্ডে ঢোকার পর বালুচিস্তানে নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে যাদব গ্রেফতার হন বলে দাবি পাকিস্তানের। তারা ন্যয় আদালতে দাবি করেছে, যাদব মামুলি কেউ নন, চরবৃত্তি, নাশকতা ঘটানোর ছক কষতেই তিনি পাকিস্তানে ঢুকেছিলেন।
পাকিস্তানের আরও দাবি, কুলভূষণ যাদবের বিরুদ্ধে তাদের ভূখণ্ডে নাশকতা, সন্ত্রাসে যুক্ত থাকার জোরালো তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে আছে যার জোরে আন্তর্জাতিক ন্যয় আদালতে এই সংক্রান্ত মামলায় জয় সম্পর্কে তারা আশাবাদী।
পাল্টা যাদবকে ইরান থেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ভারতের দাবি। নৌবাহিনী থেকে অবসরের পর যাদব ইরানে ব্যবসাপত্র দেখতে যেতেন, তাঁর সরকারের সঙ্গে কোনও সম্পর্কই নেই বলে পাকিস্তানের সব অভিযোগ খারিজ করে জানিয়েছে ভারত।