দুবাই: পুলওয়ামা হামলার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানি নেতৃত্বকে সাবধান করে দিলেন পারভেজ মুশারফ। প্রাক্তন পাক সামরিক একনায়কতন্ত্রী প্রেসিডেন্ট ভারতের সঙ্গে পরমাণু যুদ্ধের কোনও আলোচনা, ভাবনাচিন্তাকেই অবাস্তব আখ্যা দিয়ে বলেছেন, অত সহজ নয় ওটা। এ ধরনের কথাই বলবেন না। সবসময় সামরিক কৌশল বলে একটা ব্যাপার থাকে।
১৯৯৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত পাক প্রেসিডেন্ট ছিলেন মুশারফ। বেশ কিছুদিন দুবাইয়ে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে রয়েছেন। পাক সংবাদপত্র দি ডন এর খবর, সেখানে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেছেন, পাকিস্তান ভারতের ওপর একটা পরমাণু বোমা ফেললে পড়শী রাষ্ট্রও ২০টা বোমা মেরে আমাদের ধ্বংস করে দিতে পারে।
১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হামলায় অন্তত ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যুর পর ক্রমাগত উত্তপ্ত হয়ে চলছে ভারত, পাকিস্তান সম্পর্ক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানকে সন্ত্রাস দমনে ব্যবস্থা নিতে বলে মৃত জওয়ানদের বলিদান ব্যর্থ হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সেনাবাহিনীকে তাদের পছন্দমতো সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। পাল্টা ইমরান খানও ভারতের কাছে পুলওয়ামা হামলায় তথ্যপ্রমাণ চেয়েছেন, পাকিস্তানের ওপর হামলা হলে তাঁরাও সমুচিত জবাব দেবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।
এই প্রেক্ষাপটেই ওই মন্তব্য মুশারফের। তিনি বলেছেন, সমাধান একটাই। তা হল, আমাদের আগে ৫০টা পরমাণু বোমা মেরে ওদের আক্রমণ করতে হবে যাতে পাল্টা ওরা ২০টা বোমা মারতেই না পারে। আপনারা কি ৫০টা বোমা নিয়ে ওদের আঘাত করতে তৈরি?
ডন –এর খবর, ১৯৯৯-এর কারগিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাপ্রধান পদে থাকা মুশারফ বলেছেন, কাশ্মীরে কিছু এলাকায় ভারত যেমন সুবিধাজনক জায়গায় আছে এবং সার্জিক্যাল হামলা চালাতে পেরেছিল, তেমনই পাকিস্তানও অন্য অনেক জায়গায় তুলনামূলক ভাবে ভাল জায়গায় আছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সম্ভাব্য যে কোনও ভারতীয় অভিযান মোকাবিলায় আগেভাগে প্ল্যান তৈরি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মুশারফ।
প্রসঙ্গত, প্রাক্তন জেনারেলকে বেনজির ভুট্টো হত্যা মামলা ও লাল মসজিদের মৌলবি হত্যা মামলায় পলাতক ঘোষণা করা হয়েছে। ২০০৭ এর সংবিধান খারিজের জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা সহ আরও একাধিক মামলা ঝুলছে তাঁর নামে। চিকিত্সার জন্য ২০১৬-য় সংযুক্ত আরব আমিরশাহি যান, তারপর আর পাকিস্তান ফেরেননি মুশারফ।