ইসলামাবাদ: জোর করে ধর্মান্তকরণ ইসলামবিরোধী। ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে কখনওই জোর করে ধর্মবদলের দৃষ্টান্ত নেই। মন্তব্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের।

পাকিস্তানের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ইসলামাবাদে জাতীয় সংখ্যালঘু দিবসের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সোমবার বক্তৃতা দেন ইমরান। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সমস্ত উপাসনাস্থল সুরক্ষিত বলে দাবি করেন ইমরান। ভবিষ্যতে সেগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি। বলেন, ‘কীভাবে আমরা কাউকে বলপূর্বক ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে পারি! কোনও অমুসলমানকে বিয়ে করে বা মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়ে কীভাবে কাউকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী করে তুলতে পারি! বা ধর্মের জন্য কীভাবে কাউকে হত্যা করতে পারি!’

ইমরান যোগ করেন, ‘এই সমস্তকিছুই ইসলামবিরোধী। ঈশ্বর যদি তাঁর দূতকেই  কারও ওপর ধর্মীয় বিশ্বাস চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা না দেন, তো আমরা কে?’ পাকিস্তানকে মদিনার আদলে গড়ে তোলার কথাও শোনা গিয়েছে ইমরানের মুখে। মানুষের অধিকাররক্ষা করার পাশাপাশি নাগরিকদের আইনের সুবিচার এবং সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার অঙ্গীকারও করেন তিনি।

গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে শিখদের জন্য কর্তারপুর করিডর খুলে দেওয়ার জন্য পাক সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও জানান ইমরান। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানে ৭৫ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাস। যদিও বেসরকারি মতে, ৯০ লক্ষেরও বেশি হিন্দু বাস করেন পাকিস্তানে। বেশিরভাগ হিন্দুরই বাস সিন্ধ প্রদেশে।

ঘটনা হচ্ছে, এপ্রিলে বার্ষিক রিপোর্টে পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন বলপূর্বক ধর্মান্তকরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। সেই রিপোর্টে বলা হয়, গত এক বছরে সিন্ধ প্রদেশে প্রায় এক হাজার হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মহিলাকে বিয়ের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে রূপান্তরিত করা হয়েছে। গত মার্চে সিন্ধ প্রদেশের ঘোটকি জেলার হিন্দু পরিবারের দুই বোন রবীনা (১৩ বছর) ও রীনা (১৫ বছর)-কে অপহরণ করে জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এলাকার প্রভাবশালী কিছু লোকজনের বিরুদ্ধে। জুলাইয়ের গোড়ায় পাকিস্তানের সিন্ধ অ্যাসেম্বলি এই ধরনের ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবিতে সোচ্চার হয়।

তারপরই ইমরানের এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।