করাচি: চরম দারিদ্র্যে জর্জরিত পাকিস্তানের ছবি উঠে এলে সমীক্ষায়। সেদেশের প্রায় অর্ধেক পরিবারেরই দুবেলা দুমুঠো অন্নের সংস্থান সঠিকভাবে হয় না। ওই পরিবারগুলির সদস্যদের পুষ্টিজনিত প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয় না। এর ফলে প্রচুর সংখ্যাক শিশু ক্রনিক পুষ্টিহীনতা ও বাড়বাড়ন্তের অভাবের শিকার। আর্থিক সংকটগ্রস্ত পাকিস্তানে এ ধরনের সমীক্ষাতেই এই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
জাতীয় পুষ্টি সমীক্ষা, ২০১৮-র রিপোর্ট অনুসারে, সমগ্র পাকিস্তানের ৪০.২ শতাংশ শিশুই ক্রনিক অপুষ্টি ও শারীরিক বাড়বাড়ন্তের অভাবের শিকার, যা তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের অন্তরায়। জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা মন্ত্রকের পরিচালিত এই সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে বলে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ৩৬.৯ শতাংশ পাকিস্তানি পরিবারের খাদ্যের অনিশ্চয়তা রয়েছে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে সহজলভ্য পুষ্টিকর খাবারের সংস্থান তাদের নেই।


পাকিস্তানের শিশুদের ক্রমবর্দ্ধমান অপুষ্টিজনিত সমস্যার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণের উদ্দেশ্যেই এই সমীক্ষা চালানো হয়।
পাকিস্তানের ইতিহাসে এটি অন্যতম বৃহত্ সমীক্ষা। প্রায় ১,৪৫,৩২৪ জন মহিলা, পাঁচ বছরের কম ৭৬,৭৪২ জন শিশু এবং ১০ থেকে ২০ বছর বয়সের ১,৪৫,৮৪৭ জন সহ প্রায় লক্ষাধিক পরিবারের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। অংশগ্রহনকারীদের রক্ত ও প্রস্রাবের নমুনা সংগ্রহ করে সমীক্ষাকারী দল। একইসঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের স্বাভাবিক শারীরিক বিকাশ এবং তা রোগ বা অপুষ্টিজনিত কারণে ব্যাহত হচ্ছে কিনা, তা জানার জন্য তাদের বাড়ির আশেপাশের জলের মান ও নিকাশী পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখা হয়।
সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের ৪৮.৪ শতাংশ মহিলাই তাঁদের শিশু সন্তানদের স্তনপান করান। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, অপুষ্টি কিছুটা বংশানুক্রমিকও বটে। কারণ, যে মহিলারা পর্যাপ্ত পুষ্টি পান না, তাঁরা দুর্বল সন্তানই প্রসব করেন। সমীক্ষায় বহু পরিবারেই পুষ্টির ব্যাপারে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে বৈষম্যের বিষয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।