আবুধাবি: পাকিস্তানের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কান্ট্রিজ (ওআইসি)–এর সভায় প্রথম প্রতিনিধিত্ব করে বড় কূটনৈতিক সাফল্য পেল ভারত। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সেখানে বলেছেন, যে সন্ত্রাসবাদ বিশ্বের বিভিন্ন এলাকাকে অস্থির করে রেখেছে, গোটা বিশ্বকে বিপদের মুখে দাঁড় করিয়েছে, তার মোকাবিলায় চলতি লড়াই কোনও বিশেষ ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। ওআইসি-র তরফে বিদেশমন্ত্রীকে পাঠানো আমন্ত্রণ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রবল চাপ দিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। সম্মেলনের আয়োজক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পাকিস্তানের দাবি খারিজ করে আমন্ত্রণ বহাল রাখে। প্রতিবাদে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি অধিবেশন বয়কট করে অনুপস্থিত থাকেন।
সেখানেই ৫৭টি ইসলামিক রাষ্ট্রের মঞ্চে সুষমা প্রথম ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী হিসাবে তাঁর প্রথম ভাষণে বলেন, সন্ত্রাসবাদ, উগ্রপন্থার নানা নাম, তকমা আছে। বিভিন্ন কারণ ব্যবহার করা হয় তার পিছনে। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রেই তা চালানো হয় ধর্মের বিকৃতি ঘটিয়ে, সাফল্য পাওয়ার জন্য বিপথে চালিত বিশ্বাসকে হাতিয়ার করা হয়। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই মানে কোনও ধর্মের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সালে ইন্দিরা গাঁধী মন্ত্রিসভার সদস্য, পরে দেশের রাষ্ট্রপতি পদে বসা ফকরুদ্দিন আলি আহমেদকে ওআইসির রাবাত সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, যদিও তিনি মরক্কোর রাজধানী পৌঁছনোর পর পাকিস্তানের চাপে তা প্রত্যাহার করা হয়। তারপর থেকে ওআইসি-র যাবতীয় অনুষ্ঠানে ভারতকে ব্রাত্যই রাখা হয়েছে।
সুষমা এদিনের ভাষণে কোরান থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ইসলাম মানে শান্তি। আল্লাহর ৯৯টি নামের কোনওটিতেই হিংসার কথা নেই। ঠিক তেমনই, বিশ্বের প্রতিটি ধর্মই শান্তি, সৌভ্রাতৃত্ব, সহানুভূতি, দয়ার কথা বলে। আমি আমার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ১৩০ কোটি ভারতীয়ের, যাদের মধ্যে সাড়ে ১৮ কোটির বেশি মুসলিম ভাই-বোনও আছেন, অভিনন্দন বার্তা নিয়ে এসেছি। আমাদের মুসলিম ভাই, বোনেরা ভারতের বিশাল বিবিধতার এক ক্ষুদ্র রূপ। ভারতের খুব সামান্যসংখ্যক মুসলিমই মৌলবাদী ভাবনা, চরমপন্থী দর্শনের বিষাক্ত প্রচারের শিকার হয়েছেন। ১৭ মিনিটের ভাষণে একবারও পাকিস্তানকে টানেননি তিনি।