নয়াদিল্লি: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত ও চিনের চলতি টানাপোড়েনের মধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের (US Defense Ministry)  রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল।  ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় গ্রাম গড়ে তুলছে চিন (China)।  পেন্টাগনের ওই রিপোর্টে অরুণাচল প্রদেশ সংলগ্ন বিতর্কিত এলাকায় ১০০ টি ঘর বিশিষ্ট গ্রামের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।  চিনা আগ্রাসনের অভিযোগ এবার চলে এল মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রকের রিপোর্টেও। 


মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা রিপোর্টে আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (পেন্টাগন) ভারত সংলগ্ন এলএসি অর্থাৎ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় চিনের ক্রমবর্দ্ধমান পরিকাঠামোর উল্লেখ করা হয়েছে। ‘মিলিটারি অ্যান্ড সিকিউরিটি ডেভেলাপমেন্টস ইনভলভিং পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না-২০২১’ শীর্ষক এই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, চিনের এই পরিকাঠামোর কারণে ভারতের সরকার ও সংবাদমাধ্যমের চিন্তা বাড়াচ্ছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এ সত্ত্বেও চিন এলএসি সংলগ্ন এলাকায় ভারতের নির্মাণ কাজকে বিবাদের কারণ বলে দাবি করছে। চিনের এই গ্রাম গড়ে তোলা সম্পর্কে এর আগেও ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে খবর সামনে এসেছে। এরমধ্যে গ্রামের উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবিও সামনে এসেছিল। এই গ্রাম যে এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে, তা ১৯৬২-র যুদ্ধর আগে থেকেই চিনের কব্জায় রয়েছে। অরুণচল প্রদেশ ছাড়াও এলএসি সংলগ্ন অন্য এলাকাতেও গ্রাম গড়ে তুলছে, যা যুদ্ধেক সময় সেনাদের জন্য ব্যারাক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। 


এক বছর আগে সিকিম সংলগ্ন বিবাদিত ডোকলাম এলাকা সংলগ্ন চিনের এমনই একটি গ্রাম সম্পর্কে ছবি সহ খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সম্প্রতি ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডিং ইন চিফ মনোজ পাণ্ডে চিনের এ ধরনের গ্রাম গড়ে তোলার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। 


পেন্টাগনের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ভারত সংলগ্ন এলএসি-তে নিজেদের দাবি মজবুত করতে ‘ইনক্রিমেন্টাল অ্যান্ড ট্যাকটিক্যাল’ পদক্ষেপ করছে চিন। এছাড়াও চিন ভারত সংলগ্ন এলাকায় ফাইবার-অপটিক নেটওয়ার্ক বসানোর কাজ চালাচ্ছে, যাতে সামরিক  যোগাযোগ আরও উন্নত করা যায়। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, উত্তেজনা শুরুর পর থেকেই ভারত ও চিন-উভয় দেশই এলএসি-তে বড় সংখ্যায় সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। 


পেন্টাগনের এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার বা ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনও দেওয়া হয়নি। পেন্টাগনের ১৯২ পৃষ্ঠার এই রিপোর্টে চিনের ক্রমবর্দ্ধিত সামরিক শক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।