ওয়াশিংটন: দিন দশেক আগেই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ বিয়েছিলেন দুই রাষ্ট্রনেতা। সেখানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War) পরিস্থিতির প্রসঙ্গ উঠেছিল। কিন্তু একনায়কতন্ত্র তথা স্বৈরশাসনের কথা বলতে গিয়ে এ বার ভারতের উল্লেখ করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যাও দিলেন তিনি।
ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বাইডেনের
শুক্রবার সিয়াটলে ত্রাণ সংগ্রহের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন বাইডেন। সেখানেই বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বাইডেন জানান, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যৌথ মহড়া চালাতে আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের চতুর্দেশীয় জোট গড়া হয়েছে। তা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। চিনের উদ্বেগ বাড়াতেই আমেরিকা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন। কিন্তু সকলকে একজোট করতে, পারস্পরিক সহযোগিতা গড়ে তুলতেই এমন পদক্ষেপ বলে তাঁকে সাফ জানিয়ে দেন তিনি (India-US Relations)।
এর পরই বাইডেন বলেন, “আমি চিনপিংকে বলি, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্জলে পারস্পরিক ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। স্বৈরাচারীরা এই ঐক্যকেই সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। ভারতেরও অনেক সমস্যা রয়েছে। নিজের নিজের সমস্যা রয়েছে ওই অঞ্চলের সব দেশের। শুধু চিন নয়, রাশিয়া, ফিলিপিন্স-সহ বহু দেশেই বর্তমানে একনায়কতন্ত্র কায়েম হয়েছে। তাই একনায়কতন্ত্র (Biden on Autocracy) যে অপরিহার্য নয়, তার বাইরে গিয়েও সমবেত ভাবে কাজ করা যায়, এই ধারণা গড়ে তোলা জরুরি ছিল।
বাইডেনের দাবি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেনতেন প্রকারে ন্যাটোকে ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন। ভেবেছিলেন অতি সহজেই তাতে সফল হবেন তিনি। কিন্তু পুতিন যা চেয়েছিলেন, তার উল্টোটাই করে দেখানো গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেন বাইডেন। ইউক্রেনের মানুষের সাহসিকতাকেও কুর্নিশ জানান বাইডেন। রাশিয়া ভেবেছিল ইউক্রেনেক মানুষ তাঁর সামনে মাথানত করে থাকবেন, কিন্তু তার উল্টোটাই ঘটছে বলে দাবি করেন বাইডেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে বিপরীত অবস্থান
কিন্তু ভারতকে নিয়ে বাইডেনের মন্তব্যই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে কূটনীতিকদের। একনায়কন্ত্র, স্বরতন্ত্র নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভারতের উল্লেখ, মোটেই দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য সুখকর নয় বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে এতে অশ্চর্যও বোধ করছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ। আন্তর্জাতিক মহলে ভারত সরাসরি রাশিয়ার বিরোধিতা না করায় আমেরিকা চটে রয়েছে বলে মত তাঁদের।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যদিও যুদ্ধ নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন বাইডেনের সামনে। ভার্চুয়াল বৈঠক চলাকালীন মোদি জানান, ফোনে পুতিনের সঙ্গে একাধিক বার কথা বলেছেন তিনি। শান্তির পক্ষে সওয়াল করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যাওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। বুচা গণহত্যারও ভারত তীব্র নিন্দা করেছে বলে বাইডেনকে জানান মোদি। তার পরেও একনায়কতন্ত্র নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বাইডেনের মুখে ভারতের উল্লেখকে ভাল ভাবে নিচ্ছে না দিল্লি।