জেরুসালেম: সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদের ক্রমবর্ধমান বিপদ সম্পর্কে ভারত ও ইজরায়েল, দুদেশের উদ্বেগের কথা উঠল নরেন্দ্র মোদী, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বৈঠকে। বুধবার ঐতিহাসিক ইজরায়েল সফরের দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী মোদী বৈঠকে বসেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সেখানে তিনি নেতানিয়াহুকে বলেন, ভারত যেমন সন্ত্রাসবাদীদের হিংসা, ঘৃণা ও বিদ্বেষের শিকার, তেমনই ইজরায়েলও। মোদী জানান, তাঁরা নিজেদের কৌশলগত স্বার্থরক্ষায় সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে একযোগে আরও পদক্ষেপ করতে একমত হয়েছেন। দুজনেই একমত এ ব্যাপারে যে, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় কড়া দাওয়াই দরকার।

পরে যৌথ বিবৃতিতেও দুই রাষ্ট্রনেতা বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতার সামনে সন্ত্রাসবাদ যে বিরাট বিপদ, সে ব্যাপারে সহমত প্রকাশ করেন। সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় তাঁদের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথাও বলেন। বিবৃতিতে বলা হয়, কারণ যা-ই হোক না কেন, সন্ত্রাসবাদকে কোনওভাবেই ন্যয়সঙ্গত বলে সাফাই দেওয়া যায় না। সন্ত্রাসবাদীদের পাশাপাশি তাদের সংগঠন, নেটওয়ার্ক, যারা তাদের সমর্থন, উত্সাহ, মদত, আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে, ব্যবস্থা নিতে হবে সবার বিরুদ্ধে।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত সার্বিক কনভেনশন গ্রহণে সহযোগিতার ব্যাপারেও দায়বদ্ধতা প্রকাশ করেন তাঁরা। মোদী বলেন, আমাদের লক্ষ্য এমন এক সম্পর্ক গড়ে তোলা যাতে উভয়ের অগ্রাধিকারের প্রতিফলন ঘটবে এবং যা দুটি দেশের জনগণের বন্ধনের ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে।

মোদী ইজরায়েলি প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিনের সঙ্গেও দেখা করেন। মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচিতে ইজরায়েলের উন্নত প্রযু্ক্তি কী ভাবে সাহায্য করতে পারে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি কী ভাবে হতে পারে, তা নিয়ে দুজনের আলোচনা হয়। ইজরায়েল প্রকৃত বন্ধু, বলেন মোদী। গত নভেম্বরে রিভলিনের ভারত সফরের কথাও মনে করিয়ে দেন। দুদেশের সম্পর্কের জয়গান গেয়ে বলেন, আজ আই টু আই এবং আই ফর আই। যখন আমি বলি আই ফর আই, তখন এটাই বোঝাতে চাই যে, আই হল ইন্ডিয়া উইথ ইজরায়েল এবং ইন্ডিয়া ফর ইজরায়েল। ট্যুইট করেও বলেন, প্রটোকল ভেঙে ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট যে উষ্ণতা দেখিয়ে আমায় স্বাগত জানালেন, তা ভারতের মানুষের প্রতি সম্মানেরই প্রকাশ।

দুটি দেশের মধ্যে আজ মহাকাশ, কৃষি ও জল সংরক্ষণের মতো প্রধান ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ৭টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের ভারত-ইজরায়েল শিল্প গবেষণা ও উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনী তহবিল গঠনের লক্ষ্যেও চুক্তি হয়েছে।

মোদী বলেন, আমরা একমত, আমাদের গবেষক, বিজ্ঞানীরা একত্রে পারস্পরিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করবেন।