লন্ডন: ভারতে অপুষ্টি ও স্থূলতা তীব্র হচ্ছে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে একটি আন্তর্জাতিক রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, দেশের অর্ধেক মহিলা অ্যানেমিয়া বা রক্তাল্পতার শিকার। ২২ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক মহিলার ওজন প্রয়োজনের অতিরিক্ত।


সম্প্রতি, ভারত সহ বিশ্বের ১৪০টি দেশে সমীক্ষা চালিয়ে পুষ্টি সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে গ্লোবাল নিউট্রিশন রিপোর্ট, ২০১৭। সেখানে অপুষ্টির তিন ধরনকে মাপকাঠি হিসেবে ধরা হয়েছে। এই তিন মাপকাঠি হল—শিশুদের বিকাশ-রোধ, প্রজননে যোগ্য মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতা এবং পূর্ণবয়স্ক মহিলাদের মাত্রাতিরিক্ত ওজন।


সমীক্ষায় উঠে এসেছে—পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩৮ শতাংশ শিশুদের বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছে না। এর প্রধাণ কারণ, সুষম পুষ্টি না মেলা। এর ফলে, তাদের মানসিক গঠনের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। ২১ শতাংশ শিশুদের ‘নষ্ট’ এবং ‘ভীষণই নষ্ট’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ, বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী, তাদের শরীরের ওজন একেবারেই ঠিক নয়।



শিশুদের পাশাপাশি, মহিলাদের নিয়েও আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে রিপোর্টে। বলা হয়েছে, প্রজননে যোগ্য মহিলাদের ৫১ শতাংশ রক্তাল্পতার শিকার। যে কারণে, মায়ের সঙ্গে সন্তানদেরও দীর্ঘমেয়াদের ভিত্তিতে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২২ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক মহিলার ওজন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। সেই তুলনায় পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার ১৬ শতাংশ।


রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ‘স্টান্টিং’ বা শারিরীক বিকাশের সমস্যা সমাধানে বেশ কিছুটা অগ্রগতি করলেও, মহিলাদের অ্যানেমিয়া, বেশি ওজনের সমস্যা এবং ডায়াবেটিস সমস্যার সমাধানে কোনও সুরাহা হয়নি ভারতে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ পূর্ণিমা মেনন জানান, অপুষ্টি ও স্থূলতা রোধ করতে দ্বিগুণ প্রচেষ্টার প্রয়োজন। এই দুই পরিস্থিতির মধ্যে যে ফারাক রয়েছে, তা পূরণ করতে হবে।


শুধু ভারত নয়, রিপোর্ট অনুযায়ী, সমীক্ষা চালানো ৮৮ শতাংশ দেশে অপুষ্টির তিন ধরনের মধ্যে দুটি বর্তমান। বলা হয়েছে, এখন বিশ্বের সাতশো কোটি জনসংখ্যার মধ্যে অন্তত ২০০ কোটি মানুষ স্থূলতার শিকার।