পাক সংবাদ মাধ্যমের একাংশ আবার ভারতের দাবিতে জল ঢেলে দিয়েছে। তারা মানতে নারাজ, হেগের আদালত ভারতের হয়ে চরবৃত্তির দায়ে কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের সাজা স্থগিত ঘোষণা করেছে। জিও টিভি-র দাবি, পাকিস্তানের ওপর কোনও এক্তিয়ারই নেই ওই আদালতের, তারা সংশ্লিষ্ট নানা পক্ষের সম্মতি নিয়ে স্রেফ কোনও অভিযোগ গ্রহণ করতে পারে মাত্র। ডন-এর অনলাইন সংস্করণে আন্তর্জাতিক কোর্ট কুলভূষণের ফাঁসি আটকে দিয়েছে, ভারতের এই দাবির উল্লেখই করেনি। পাশাপাশি স্থগিতাদেশের খবরই তাদের প্রতিবেদনে ছাপেনি দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
গত মাসে প্রাক্তন ভারতীয় নৌ অফিসার কুলভূষণকে চরম সাজা দেয় পাক সেনাবাহিনীর ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শাল। তাতে সিলমোহর দেন খোদ পাক সেনাপ্রধান। পাল্টা হেগের আদালতে যায় ভারত। দাবি করে, কুলভূষণের ক্ষেত্রে ভিয়েনা কনভেনশনের ধারা ভেঙেছে পাকিস্তান। নয়াদিল্লি এও বলে, দীর্ঘদিন পাকিস্তানে কুলভূষণকে আটকে রাখা হলেও সে ব্যাপারে কিছুই জানতে পারেনি ভারত, অভিযুক্ত ভারতীয় নাগরিককেও পাকিস্তান তাঁর অধিকার কী কী, তা জানায়নি। বারবার বলা সত্ত্বেও কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে অনুমতি দেয়নি ভারতীয় কনস্যুলেটকে।
৮ মে আন্তর্জাতিক আদালত ভারতের আবেদন পাওয়ার কথা বিবৃতি দিয়ে জানায়। গতকালই নয়াদিল্লিতে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জানান, তিনি কুলভূষণের মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁকে আর্টিকল ৭৪-এর আওতায় রুলস অব কোর্টের প্যারাগ্রাফ ৪ অনুসারে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের প্রেসিডেন্টের আদেশের ব্যাপারে অবহিত করেন।
এদিকে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল ওয়াগলে নয়াদিল্লিতে আজ সাংবাদিকদের বলেন, পাকিস্তান বেআইনি ভাবে কুলভূষণকে আটকে রেখেছে, তাঁর জীবন বিপন্ন, সে কারণেই অনেক ভাবনাচিন্তা করেই ভারত আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৬ বার কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় কনস্যুলেটকে দেখা করতে দেওয়ার আবেদন করেছিল ভারত, কিন্তু পাকিস্তান সাড়াই দেয়নি। ওঁর মামলা সংক্রান্ত নথিপত্র চেয়েছিল ভারত, তাও দেয়নি পাকিস্তান।
ওয়াগলে এও জানান, কুলভূষণের পরিবারের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে পেশ করা আবেদন কোন পর্যায়ে রয়েছে, সে ব্যাপারেও কিছু জানানো হয়নি। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ২৭ এপ্রিল পাক বিদেশ সংক্রান্ত উপদেষ্টা সরতাজ আজিজকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেন, কুলভূষণের পরিবারকে পাক ভিসা দেওয়া হোক, যাতে তারা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারে।