দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে ভারতীয় কনস্যুলেট প্রতিনিধিকে দেখা করতে দেওয়া হয়। পাকিস্তানের জেলে বন্দি ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন কমান্ডারের সঙ্গে দেখা করলেন ইসলামাবাদে নিযু্ক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনার গৌরব অহলুওয়ালিয়া। গতকাল পাকিস্তান জানিয়েছিল, সোমবারই ভারতীয় কনস্যুলেটের প্রতিনিধিদের কুলভূষণের কাছে যেতে দেওয়া হবে।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার বলেছেন, 'আমরা রিপোর্টের অপেক্ষা করছি। তবে মনে হচ্ছে পাকিস্তানের ভিত্তিহীন দাবিকে তুলে ধরতে যাদবকে দিয়ে জোর করে শেখানো বুলি বলিয়ে নেওয়া হয়েছে।' তিনি যোগ করেন, 'পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ নিয়ে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।'
পাকিস্তানে নাশকতা ছড়ানোর অভিযোগে পাক সামরিক আদালতের বিচারে দোষী ঘোষিত, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া কুলভূষণ এই প্রথম ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করতে পারলেন। পাক সংবাদপত্র দি ডন এর খবর, অহলুওয়ালিয়া আজ সকালে পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ডঃ মহম্মদ ফয়সলের সঙ্গেও বৈঠক করেন। যদিও ভারতের দাবিমতো কুলভূষণের সঙ্গে তিনি বাধাহীন ভাবে কথা বলতে পেরেছেন কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। রবিবার পাকিস্তান জানায়, আন্তর্জাতিক ন্যয় আদালতের (আইসিজে) সাম্প্রতিক রায় মেনেই কুলভষণের সঙ্গে ভারতীয় কনস্যুলেট প্রতিনিধিকে দেখা করতে দেওয়া হবে। ভারতে সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখার পর গ্রহণ করে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে নয়াদিল্লিতে বলা হয়, আইসিজে-র রায়ের মূল মর্মবস্তুর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘অবাধ’, ‘ন্যয়সঙ্গত’ ও ‘অর্থবহ’ বৈঠকের জন্য পাকিস্তান ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ভারত সরকারের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদের সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রবল উত্তেজনার মধ্যেই কুলভূষণের সঙ্গে দেখা হল অহলুওয়ালিয়ার। গত অগাস্টে ভারত কুলভূষণের সঙ্গে কনস্যুলেটকে দেখা করতে দেওয়ার পাকিস্তানি প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। ভারত পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, কুলভূষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে হবে অবাধ।
৪৯ বছরের কুলভূষণকে ২০১৭-র এপ্রিলে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাক সামরিক কোর্ট। সেই বন্ধ দরজার আড়ালে হওয়া বিচারকে প্রহসন বলে প্রত্যাখ্যান করে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে চ্যালেঞ্জ করে ভারত। আদালত জানিয়ে দেয়, আন্তর্জাতিক বিধি মেনে কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে ভারতীয় কনস্যুলেটকে, তাঁর পুনর্বিচার করতে হবে, তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না।