নয়াদিল্লি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’। তবে এই আইনের কি আদৌ কোনও প্রয়োজন ছিল? সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরব আমিরশাহির রাজধানী আবু ধাবিতে গাল্ফ নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে হাসিনা জানিয়েছেন, “সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।” একই সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও তাঁর প্রশ্ন, “আমরা বুঝতে পারছি না ভারত কেন এটা করল। এর কোনও প্রয়োজন ছিল না।” তবে সিএএ কিংবা এনআরসি নিয়ে যে তাঁদের তেমন কোনও মাথাব্যাথাও নেই, সেটাও পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন মুজিব কন্যা।


তাঁর কথায়, “সিএএ এবং এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত সরকারও সেটাই বিশ্বাস করে।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও যে তাঁকে এই বিষয়ে এমনই আশ্বাস দিয়েছেন, তাও লুকিয়ে রাখেননি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।


উল্লেখ্য, গত বছরই (১১ ডিসেম্বর, ২০১৯) সংসদে পাশ হয় সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের অনুমোদনের পর তা আইনে রূপান্তরিত হয়। এরপরই সারা দেশে এই আইন কার্যকর করতে তৎপর হয় কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের আগে পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হলেও মুসলিমদের কথা এই সংশোধিত আইনে উল্লেখ করা হয়নি। যা নিয়ে বিরোধীরা বিরোধিতায় নেমেছে। কংগ্রেস, আপ, তৃণমূল সহ বাম দলও এই ‘সংবিধান বিরোধী’ আইনের বিরোধিতা করছে।


এদিকে, প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিশেষ করে বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার’-কে হাতিয়ার করে পাল্টা প্রচার চালাচ্ছে বিজেপিও। এই আইন নাগরিকত্ব দেবে। নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে না, আশ্বস্ত করছেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ সহ শাসক দলের শীর্ষনেতারা। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন প্রতিক্রিয়া বেশ গরুত্বপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহল মহলের।