তেহরান: দমনপীড়নের (Oppression) খবর আসছিলই। এবার সরকার-বিরোধী (anti government protest) এক প্রতিবাদীকে মৃত্য়ুদণ্ড (execution) দিল ইরান (Iran) যা কিনা এ যাবৎকালের মধ্যে প্রথম। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর আসতেই তুমুল শোরগোল গোটা বিশ্বে। 


কী জানা গেল?
রবিবার ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানায়, সরকার-বিরোধী এক প্রতিবাদীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরানের রেভোলিউশনারি কোর্ট। বাকি ৫ জনের কারাদণ্ড হয়েছে। সরকারি ভবনে আগুন লাগানোর অপরাধে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি। যাঁরা কারাদণ্ড পেয়েছেন, তাঁদের জেলের মেয়াদ ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই আটক শতাধিকের জন্য প্রকাশ্যে শুনানির কথা ঘোষণা করে রেখেছে ইরান। সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে গত সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে টালমাটাল গোটা দেশ। তার মধ্যেই এই শাস্তি ঘোষণা বিক্ষোভের আগুনে নতুন ঘি ঢালবে, আশঙ্কা বাসিন্দাদের অনেকের।


প্রেক্ষাপট...
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তরুণী মাহসা আমিনির রহস্যমৃত্যুর পর থেকে অগ্নিগর্ভ ইরানের পরিস্থিতি। মাহসা-র পরিবারের দাবি, নিয়ম মেনে হিজাবে মাথা ঢেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ২২ বছরের তরুণী। কিন্তু সেটি আলগা করে জড়িয়ে রাখা হয়েছে বলে মনে হয়েছিল Morality Police-র। তাই গাড়ি থেকে বের করে রাস্তার উপরই গ্রেফতার করা হয় মাহসাকে। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি তাঁর। বরং তিনদিনের মাথায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়। পরিবাররে অভিযোগ ছিল, পুলিশি হেফাজতে নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে তরুণীকে যা মানেনি প্রশাসন। তার পর থেকেই বিক্ষোভের আগুন দিকে দিকে। যদিও অক্টোবরে সংবাদসংস্থা এএফপি ইরানের ফরেনসিক অর্গানাইজেশন-কে উদ্ধৃত করে জানায় ' মাথা, জরুরি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং হাত-পায়ে আঘাত লেগে মাহসা আমিনি মারা যাননি। আট বছর বয়সে তাঁর মস্তিষ্কে টিউমারের যে অপারেশন হয়েছিল, তার মধ্যেই এই মৃত্যুর কারণ লুকিয়ে রয়েছে।' পুলিশ অবশ্য ইরানি-কুর্দিশ তরুণীর মৃত্যুর পর পরই আচমকা হার্ট অ্যাটাকের ব্যাখ্যা দিয়েছিল। মাহসা-র পরিবার সেই ব্যাখ্যা মানতে চায়নি। তাঁর বাবা বলেছিলেন, মেয়ের পায়ে ক্ষত দেখেছেন। পুলিশ স্টেশনে যে ওই তরুণীর উপর প্রাণঘাতী জুলুম করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তাঁরা। ২২ বছরের তরতাজা প্রাণের এমন হঠাৎ মৃত্যুতে ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে ইরানে। দেশের একাধিক শহরে মহিলারা প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেন। মাহসা-র সমর্থনে কেউ প্রকাশ্যে চুল কেটে ফেলেন, কেউ আবার হিজাব জ্বালিয়ে দেন। পাল্টা দমনের রাস্তা নেয় ইরান সরকার। বিক্ষোভকারী, সংশোধনবাদী আন্দোলকারী, সাংবাদিক-সহ ১৯০০ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে দাবি সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমের। অসলো-র এক মানবাধিকার সংস্থা জানায়, অক্টোবর পর্যন্ত এই দমনের জেরে ১৫৪ জন। এবার শুনানি করে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা।
কোথায় শেষ এই প্রতিবাদের?


আরও পড়ুন:শেষবেলায় ফের নায়ক স্টোকস, পাক বধ করে টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্য়ান্ড