ঢাকা: ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারদের পর এবার কি শিক্ষক মহল হতে চলেছে বাংলাদেশি জঙ্গিদের নয়া টার্গেট? আজ রাজশাহী শহরে নিজের বাড়ি থেকে অল্প দূরে সন্দেহভাজন  জঙ্গিদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী নামে এক অধ্যাপক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি পড়াতেন তিনি।


বাংলাদেশি সময় সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ স্থানীয় শালবাগান এলাকার বটতলা মোড়ে জনা দুই-তিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি রেজাউলের ওপর হামলা চালায়। গলা কেটে খুন করা হয় তাঁকে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। বাংলাদেশি জঙ্গিরাই তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডও ঘটানো হয়েছে ব্লগার খুনের ধাঁচেই। তবে কাউকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। আমেরিকার বেসরকারি নজরদারি সংস্থা 'সাইট' এক ট্যুইটে জানিয়েছে, আইএসের আমাক এজেন্সি বাংলাদেশে 'নাস্তিক ভাবধারা' ছড়ানোর ডাক দেওয়ায় ইসলামিক স্টেটের রেজাউলকে হত্যার দায় নেওয়ার কথা বলেছে।

এদিকে রেজাউলের হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর ঘাতকদের গ্রেফতারি চেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে দেখান পড়ুয়া-শিক্ষকরা।

৫৮ বছরের মৃত অধ্যাপক গানবাজনা সহ সাংস্কৃতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাঁশি, সেতার বাজাতেন। জামায়েতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি জঙ্গিগোষ্ঠীর শক্ত ঘাঁটি বাগমারা এলাকায় একটি স্কুলও চালাতেন তিনি। তবে ঠিক কী কারণে তাঁকে খুন হতে হল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের এক অধ্যাপক বলেছেন, কোনও রাজনৈতিক  দলের প্রতি আনুগত্য ছিল না ওনার। তবে প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার মানুষ ছিলেন। সেজন্যই হয়ত আইএসের বিষনজরে পড়েন!

ঘটনাচক্রে দু বছর আগেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক একেএম সইফুল ইসলামকে একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছিল। আনসারউল ইসলাম দায় নিলেও পুলিশ পরে তদন্ত করে সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছিল।

গত বছর থেকে বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ মানুষজনের ওপর জঙ্গি সন্ত্রাস উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ইতিমধ্যে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে চারজন নামী ব্লগারকে।