ইসলামাবাদ: জইশ-ই-মহম্মদ প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহার পাকিস্তানে আছেন বলে সেদেশের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি দিনকয়েক আগে মেনে নিলেও পাক সেনার মুখপাত্রের দাবি, ওদের কোনও অস্তিত্বই তাঁদের মাটিতে নেই! ১৪ ফেব্রুয়ারির যে পুলওয়ামা সন্ত্রাসকে কেন্দ্র করে ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে, তার দায় নিয়েছে জইশ। পুলওয়ামায় সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন ৪০ সিআরপিএফ জওয়ান।
পুলওয়ামা হামলার পর দুই পড়শী দেশ যুদ্ধের রাস্তায় চলে এসেছে কিনা, প্রশ্ন করা হলে সিএনএন-কে পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেন, ওরা (ভারত) প্রতীকী আগ্রাসন দেখাতে গিয়ে আকাশসীমা লঙ্ঘন করে, আমরাও জবাব দিই। আমি বলব, সেজন্য যুদ্ধ লেগে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। নিয়ন্ত্রণ রেখার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখায় আমরা পরস্পরের চোখে চোখ রেখেছিলাম। দশকের পর দশক সেখানে সেনা মোতায়েন রয়েছে। তবে ভারতের আগ্রাসন ও আমাদের জবাবের পর দুপক্ষই রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করেছে। তিনি বলেন, সেনা জওয়ানের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে কারণ সামরিক পরিকল্পনার স্বাভাবিক অঙ্গ তা। পরিস্থিতি গরম হয়ে গেলে নিরাপদ থাকার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। দুতরফেই সেই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
পুলওয়ামা সন্ত্রাসের জবাবে গত সপ্তাহে ভারতীয় বায়ুসেনা পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার বালাকোটে জইশের ট্রেনিং ক্যাম্পে নাগাড়ে বোমাবর্ষণ করে। পরদিন পাক বায়ুসেনাও একটি মিগ-২১ যুদ্ধবিমান গুলি করে ফেলে দেয়, ধরা পড়েন তার সওয়ারি ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। গত শুক্রবার তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান হামলায় সন্ত্রাসবাদী ট্রেনিং ক্যাম্পের বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, বহু জঙ্গি নিহত হয়েছে, এই দাবি উড়িয়ে গফুর জানান, সেখানে একটা ইটের টুকরোও পাওয়া যায়নি, কেউ মারাও যায়নি। ভারতের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। জয়েশ পুলওয়ামা হামলার দায় নিলেও গফুরের দাবি, ওরা পাকিস্তানের ভিতর থেকে এই দাবি করেনি। পাকিস্তানে জয়েশের কোনও অস্তিত্বই নেই। রাষ্ট্রপুঞ্জ, পাকিস্তানও ওদের নিষিদ্ধ করেছে। দ্বিতীয়ত, কারও চাপে আমরা কিছু করছি না।
গত মাসেই কুরেশি সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জানিয়েছিলেন, মাসুদ আজহার পাকিস্তানে আছে। ভারত আদালতে গ্রাহ্য হতে পারে, এমন শক্ত, অকাট্য তথ্যপ্রমাণ পেশ করুক, তাহলেই তাঁর বিরুদ্ধে পাক সরকার ব্যবস্থা নেবে।
পাকিস্তানকে দোষ না দিয়ে বরং গোটা দুনিয়ার পাকিস্তানকে এ ধরনের সংগঠন, গোষ্ঠীর দাপাদাপি নির্মূল করতে সাহায্য করা উচিত বলে অভিমত জানান গফুর।