হিউস্টন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মুখ বন্ধ রাখতে বললেন হিউস্টনের পুলিশ প্রধান। মিনেসোটায় মিনিয়াপোলিশের এক পুলিশ অফিসারের হাতে একজন আফ্রো-আমেরিকানের মৃত্যুর পর আমেরিকায় তীব্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

এরইমধ্যে ট্রাম্প বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গত সপ্তাহেই ট্রাম্প ট্যুইট করেছিলেন যে, যখন লুঠতরাজ শুরু হয়, তখন গুলি চালানোও শুরু হয়। পুলিশ হেফাজতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার ঘটনায় আমেরিকা জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ হিংসাত্মক চেহারাও নেয়। এই পরিস্থিতিতে এ ধরনের বিক্ষোভ মোকাবিলায় গভর্নরদের কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই টেক্সাসের হিউস্টন সিটি পুলিশের প্রধান আর্ট অ্যাসেভেডো ওই মন্তব্য করেছেন।

জর্জের মৃত্যুর ঘটনায় এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

গত ২৫ মে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর মিনিয়াপোলিশে যে বিক্ষোভ শুরু হয়, তা ক্রমশ আমেরিকার অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের একাংশ পুলিশের সম্পত্তি সহ বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালিয়েছে।

দেশজুড়ে যখন প্রবল বিক্ষোভ চলছে তখন ট্রাম্পের মন্তব্য একেবারেই ভালোভাবে নিতে পারেন হিউস্টনে পুলিশ প্রধান। অ্যাসেভেডো বলেছেন, দেশের পুলিশ প্রধানদের পক্ষ থেকে আমি আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে বলতে চাই যে, গঠনমূলক কোনও কিছু বলার না থাকলে মুখ বন্ধ রাখুন।

গত সোমবার ভিডিও কনফারেন্সে ট্রাম্প গভর্নরদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং দেশজুড়ে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম না হওয়ায় তাঁদের দুর্বল বলে অভিহিত করেন। প্রতিবাদকারীদের মোকাবিলায় ন্যাশনাল গার্ডকে ব্যবহারের পরামর্শও দেন প্রেসিডেন্ট।

মিনিয়েপোলিশে ন্যাশনাল গার্ড যেভাবে মোকাবিলা করেছে, তার প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বিক্ষোভকারীদের কড়া হাতে দমন করার কথা বলেছেন। সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন অনুসারে ট্রাম্প বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করতে হবে। তা করতে না পারলে সময়ের অপচয় করা হচ্ছে।

অ্যাসেভেডো তরুণদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এনেছেন। তিনি বলেছেন, এটা একেবারেই আধিপত্য বিস্তারের বিষয় নয়। এটা সম্পূর্ণ হৃদয় ও মন করার বিষয়। আমাদের দয়ার্দ্রতার সঙ্গে দুর্বলতাকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে আমরা যা কিছু করতে পেরেছি, অজ্ঞতা তা নষ্ট করে দিক, এমনটা আমরা চাই না।

হলিউডের সিনেমা থেকে উদ্ধৃত করে অ্যাসেভেডো বলেছেন, আপনার যদি কিছু বলার না থাকে, তাহলে কিছু বলবেন না।

অ্যাসেভেডো বলেছেন, এটাই নেতৃত্বের মৌলিক নীতি। এখন আরও বেশি উপযুক্ত নেতৃত্বদানের প্রয়োজন।

মৃত্যুর সময় জর্জ ফ্লয়েডের হাতে ছিল হ্যান্ডকাফ। পুলিশ অফিসার ডেরেক চউভিনকে আশেপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা জর্জকে ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। জর্জ চিত্কার করছিলেন, আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে। পথচারীদের তোলা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে, তখন মিনিয়েপোলিশের ওই পুলিশ অফিসার হাঁটু দিয়ে জর্জের গলা চেপে ধরেছিল।

মেডিক্যাল পরীক্ষায় এই ঘটনাকে হত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।