বেজিং: দক্ষিণ চিন সাগর বিতর্কে এবার তোপের মুখে মার্কিন সংস্থা কেএফসি এবং অ্যাপল। দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে বেজিংয়ের সঙ্গে ফিলিপিন্সের বিরোধের জেরে চিনে ক্ষোভের মুখে পড়তে হল এই মার্কিন সংস্থাগুলি। চিন অভিযোগ করে যে, ওয়াশিংটনের মদতেই ফিলিপিন্স দক্ষিণ চিন সাগরের জলভাবে তাদের অধিকারের বিরোধিতা করেছে। এরপরই চিনের জাতীয়তাবাদীরা কেএফসি আউটলেটগুলির সামনে  বিক্ষোভ দেখান। অনলাইনে এই বিক্ষোভের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দেশপ্রেমের স্লোগান দিতে দিতে চিনা তরুণরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এবং আইফোন ভেঙে ফেলছেন।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের দাবি নাকচ হয়ে যায়। এরপরই দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমগুলি ওয়াশিংটনের সমালোচনায় সরব হয়। চিনবাসীদের ক্ষোভে ঘৃতাহুতি দিয়েছে সংবাদমাধ্যমের এই ভূমিকা।
এক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, চিনাদের দেশপ্রেম অত্যন্ত গভীর। বিশেষ করে তরুণরা আদ্যন্ত জাতীয়তাবাদী। কেএফসি এবং অ্যাপলের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। তাই চিনে তরুণরা এই দুটি সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে তাঁদের মার্কিন বিরোধী ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন।
এই বিক্ষোভে চিনে গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলি রাজনৈতিক আক্রমণের মুখে পড়েছে। জাতীয়বাদী বিক্ষোভে এই ব্র্যান্ডগুলিকে সাধারণত নিশানা করা হয়। আর এই ক্ষোভ অনেক সময়ই উস্কে দেয় সেদেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিদেশী কোম্পানিগুলিকে চিন থেকে চলে যাওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।
২০১২-তেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় পূর্ব চিন সাগরে বসতিহীন একটি দ্বীপ নিয়ে জাপানের সঙ্গে বিরোধ বেঁধেছিল চিনের। তখন জাপানি সংস্থাগুলির গাড়ি বিক্রি খুব কমে গিয়েছিল।
চিনের নেতৃত্ব অবশ্য এই বিক্ষোভকে খাটো করেই দেখাতে চেয়েছে। চিনের সরকারি সংবাদসংস্থা জিনহুয়া বলেছে, দেশপ্রেম প্রদর্শনের সঠিক পথ এটা নয়। দ্য চায়না ডেইলি-তে বলা হয়েছে, এই অতি-দেশপ্রেম জাতির প্রতি দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
হেনান প্রদেশে পুইয়াং শহরে কেএফসির দুটি আউটলেটে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য তিন প্রতিবাদকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই বিক্ষোভের নিন্দাও করেছেন কেএফসি-র কয়েকজন ক্রেতা। কেএফসি-র পণ্যর সঙ্গে নিজেদের ছবি তুলে অনলাইনে পোস্ট করেছেন তাঁরা। সেখানে একজন লিখেছেন, দেশপ্রেমী গুণ্ডারা আমাকে হেনস্থা করেছে। কেএফসি-র পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।