ঢাকা: খালেদা জিয়ার ছেলে তারিক রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ২০০৪ সালে আওয়ামি লিগের জনসভায় তত্কালীন বিরোধী নেত্রী তথা এখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে যে গ্রেনেড হামলা হয়েছিল, সে ব্যাপারেই বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনপি) সভানেত্রীর ছেলেকে সাজা দিল স্থানীয় আদালত। ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। ২০০৪ এর ২১ আগস্টের সেই গ্রেনেড বিস্ফোরণে ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন। হাসিনা প্রাণে বেঁচে যান, তবে আংশিক শ্রবণশক্তি নষ্ট হয় তাঁর। ৫০০ জন জখম হন।
ডিসেম্বরে বাংলাদেশে নির্বাচন। তার প্রাক্কালেই আজকের সাজার রায়। ২০১৪-র নির্বাচন বয়কট করেছিল খালেদার দল।
তারেকের অনুপস্থিতিতেই তাঁর বিচার হয়। আদালত তাঁকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে। বর্তমানে ৫০ বছর বয়সি তারেক আছেন লন্ডনে। গত ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলায় খালেদার ৫ বছরের কারাবাস হওয়ার পর সেখান থেকেই দল চালাচ্ছেন তারিক। ব্রিটেনে সম্ভবত তিনি আশ্রয় চেয়েছেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁর অভিবাসন স্ট্যাটাস প্রকাশ করতে সম্মত হয়নি।
আজ ঢাকার ফাস্ট ট্রাক ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহিদ নুরুদ্দিন রায় ঘোষণা করেন যাতে তারেককেও বাকি ১৮ জনের সঙ্গে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মাথাপিছু ১ লক্ষ টাকা জরিমানাও হয়েছে। তবে মৃত্যুদণ্ডের রায়ে বাধ্যতামূলক রিভিউয়ের পর হাইকোর্টের সিলমোহর পড়তে হবে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুতফোজ্জামান বাবরও আছেন।
এই মামলায় অভিযুক্ত ৪৯ জনের মধ্যে তারেক, বাবর সহ ২ মন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন তত্কালীন বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলের জোট সরকারের শীর্ষ পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্তারা। যদিও খালেদাকে অভিযুক্ত করা হয়নি।
বিচারকের আজকের রায়ে গ্রেনেড হামলার প্রেক্ষাপট, উদ্দেশ্য ও পরিণাম সম্পর্কে ১২ টি পর্যবেক্ষণ রয়েছে। তদন্তকারীরা দেখেছেন, সেই সময়কার বিএনপি জোট সরকারের একটি প্রভাবশালী অংশ, যার মধ্যে তারেকও ছিলেন, গ্রেনেড হামলার ছক কষে, হামলা চালানো হরকতউল জিহাদ আল ইসলামির সন্ত্রাসবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, হাসিনাই ছিলেন হামলার মূল টার্গেট।