ইসলামাবাদ: শুধু চরবৃত্তি নয়, সন্ত্রাসবাদ ও অন্তর্ঘাত সংক্রান্ত আর কয়েকটি মামলা ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবের বিরুদ্ধে সাজিয়েছে পাকিস্তান। সে দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথাই জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, চরবৃত্তির অভিযোগ সাজিয়ে পাক সামরিক আদালত ইতিমধ্যেই কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
গত বছরের এপ্রিলে পাক সামরিক আদালত ৪৭ বছরের কুলভূষণকে ফাঁসির সাজা দিয়েছে। পাকিস্তানের দাবি, ইরান থেকে বেলুচিস্তানে ঢুকে পড়েছিলেন কুলভূষণ। বেলুচিস্তান থেকে তাঁকে ২০১৬-র ৩ মার্চ গ্রেফতার করে নিরাপত্তা বাহিনী। ভারত অবশ্য পাকিস্তানের এই দাবি খারিজ করে দিয়েছে।
শুধু তাই নয়, কুলভূষণের বিরুদ্ধে পাক সামরিক আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ভারত আন্তর্জাতির ন্যায় বিচার আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছে। ভারতের আর্জির ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওযা পর্যন্ত পাকিস্তানের দণ্ডাদেশ কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক আদালত।
পাকিস্তানের এক সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, কুলভূষণের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এরমধ্যে সন্ত্রাস ও অন্তর্ঘাত মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই সব অভিযোগগুলির মধ্যে কুলভূষণের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র চরবৃত্তির মামলা সম্পূর্ণ হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে একটি সূত্র উল্লেখ করে জানানো হয়েছে যে, এই মামলায় তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ১৩ জন ভারতীয় আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছে পাকিস্তান। যদিও এ বিষয়ে নয়াদিল্লি অসহযোগিতার মনোভাব গ্রহণ করছে বলে ওই সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
কিন্তু যে ১৩ ভারতীয় আধিকারিককে পাকিস্তান জিজ্ঞাসাবাদ করতে করতে চায়, তাঁদের নাম ওই সূত্র জানায়নি। তবে ওই সূত্রটি থেকে দাবি করা হয়েছে, কুলভূষণকে যাঁরা পরিচালনা করছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পাকিস্তান।
সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কুলভূষণের নৌবাহিনীতে সার্ভিস প্রোফাইল, পেনশন প্রাপ্তি সংক্রান্ত ব্যাঙ্ক রেকর্ড এবং মুবারক হুসেন পটেল নামে পাসপোর্ট জারি সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে পাকিস্তান। পটেলের নামে কীভাবে পাসপোর্ট জারি হল এবং তা আসল, না নকল, তা পাকিস্তানি আধিকারিকরা জানতে চান।
মুম্বই, পুনে ও মহারাষ্ট্রের অন্যান্য স্থানে পটেলের নামে কুলভূষণের সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্যও পাকিস্তান দাবি করেছে। সূত্র উল্লেখ করে ডন এ কথা জানিয়েছে।
কুলভূষণকে পাকিস্তানের কনসুলার অ্যাকসেস না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের করা ভারতের আর্জির বর্তমানে শুনানি চলছে আন্তর্জাতিক আদালতে।