লন্ডন : চরম রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি ব্রিটেনে। দুই আস্থাভাজন মন্ত্রীর পর এবার খোদ প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যে ইস্তফা দিলেন লিজ ট্রাস (Liz Truss)। তাঁর অর্থনৈতিক বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন তো দূরের কথা, ট্রাস মন্ত্রীসভার নবনিযুক্ত চান্সেলর জেরেমি হান্ট প্রধানমন্ত্রীর একাধিক প্রস্তাব ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন বৃহস্পতিবার। যারপরই কোণঠাসা হতে শুরু করা ট্রাস ইস্তফা দাখিল করে দেন।


দলীয় ভোটে ঋষি সুনককে হারিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। তাই লিজ ট্রাসের আচমকা ইস্তফার পর কি সম্ভাবনায় উজ্জ্বল হচ্ছেন সুনক? সেই প্রশ্নই ঘোরপাক খাচ্ছে টেমসের পাড়ে। কনজারভেটিভ পার্টির দলীয় সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনে ৮১ হাজার ৩২৬ টি ভোট পান লিজ ট্রাস। অপরদিকে ঋষি সুনক ( Rishi Sunak) পেয়েছিলেন ৬০ হাজার ৩৯৯ টি ভোট।






চলতি মাসের শুরু থেকে যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানানোর পর থেকেই দলের মধ্যেই রোষের মুখে পড়তে শুরু করেন ট্রাস। ব্রেক্সিটকে বাস্তব রূপ দেওয়া, রাশিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ের মতো একাধিক ক্ষেত্রে বরিস জনসন ব্রিটেনকে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানিয়ে তাঁর আস্থাভাজনরে শুরুতে নিজের পক্ষে নিতে সক্ষম হলেও ক্রমশ একাধিক অর্থনৈতিক ইস্যুতে ঋষি সুনকের আস্থাভাজনের মন্ত্রিসভায় মুখ বুজে স্থান দিতে বাধ্য হয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়তে শুরু করেন ট্রাস।


অর্থনৈতিক বিভিন্ন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মতানৈক্যের জেরে প্রথমে অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কেরিংটনকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন লিজ ট্রাস। যারপর দিনদুয়েক আগেই ভারতীয়দের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যানকেও মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। অর্থ ও স্বরাষ্ট্র এই দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক থেকে নিজের আস্থাভাজনদের শুধু খোয়ানোই নয়, ঋষি সুনকের দুই আস্থাভাজনের বসাও মেনে নিতে হয়েছিল লিজকে। যদিও শেষমেশ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার ৪৫ দিনের মধ্যে নিজেই ইস্তফা দিলেন তিনি। এবার কি তাহলে ব্রিটেনের মসনদে দেখা যাবে কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে। ঋষি সুনকই ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেন, নাকি ব্রিটেনের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি অন্য কোনও দিকে মোড় নেয়, সেটা দেখতেই মুখিয়ে গোটা বিশ্ব।


আরও পড়ুন- শেষ ল্যাপে হার, ঋষি সুনককে হারিয়ে ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন লিজ ট্রাস