নয়াদিল্লি: সংস্থার এক কর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর খেসারত দিলেন ম্যাকডোনাল্ডসের সিইও স্টিভ ইস্টারব্রুক। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ফাস্ট ফুড কোম্পানি জানিয়েছে, ম্যাকডোনাল্ডসের ম্যানেজারদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে নিজের অধীনস্থ কর্মীদের সঙ্গে কোনওরকম রোম্যান্টিক সম্পর্কেই জড়িয়ে পড়া নিষিদ্ধ। কিন্তু তাদের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইস্টারব্রুক কোম্পানির এই পলিসি ভেঙে এক কর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন, যদিও দুজনের সম্মতির ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছিল সেই সম্পর্ক। তিনি ‘ভুল পদক্ষেপ’ করেছেন, বিবেচনা বোধের পরিচয় দেননি বলে জানিয়েছে ম্যাকডোনাল্ডস। তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ইস্টারব্রুকও কর্মীদের উদ্দেশে এক ইমেল বার্তায় প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর কথা স্বীকার করে ভুল হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন। লিখেছেন, কোম্পানির মূল্যবোধ বিবেচনা করে আমি বোর্ডের সঙ্গে সহমত যে, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে আমায়।
গোটা বিষয়টি বিস্তারিত খতিয়ে দেখে ম্যাকডোনাল্ডসের পরিচালন বোর্ড ইস্টারব্রুককে বিদায়ের দেওয়ার পক্ষে ভোট দেয়। সোমবার ফেডেরাল ফাইলিংয়ের মাধ্যমে ইস্টারব্রুকের বিচ্ছেদ সংক্রান্ত প্যাকেজের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার মুখপাত্র। ২০১৫ থেকে সিইও পদে ছিলেন তিনি। কোম্পানির বোর্ডও ছাড়ছেন।
যে কর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল ইস্টারব্রুকের, তার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবে না ম্যাকডোনাল্ডস। ইস্টারব্রুকের আইনজীবীও এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি।
ইতিমধ্যেই ক্রিস কেম্পজিনস্কিকে, যিনি সম্প্রতি ম্যাকডোনাল্ড আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন, নতুন প্রেসিডেন্ট ও সিইও পদে নিয়োগ করেছে সংস্থা।
দু সপ্তাহ আগে ম্যাকডোনাল্ডস তৃতীয় ত্রৈমাসিকে মোট আয় ২ শতাংশ কম হওয়ার কথা জানায়। এর মধ্যেই তারা একদিকে স্টোর রিমডেলিংয়ের পিছনে প্রচুর অর্থ ঢেলেছে, অন্যদিকে ডেলিভারি পরিষেবা বাড়িয়েছে। তারপর থেকে কোম্পানির শেয়ার দরও সাড়ে ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যদিও তা এখনও বর্তমান বছরে ৯.২ শতাংশ ওপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। পাশাপাশি নামী বার্গার চেন সংস্থাটি রেস্তোরাঁয় খদ্দের হ্রাস পাওয়ার সমস্যারও মুখোমুখি।
যদিও সংস্থার নেতৃত্বে পরিবর্তনের সঙ্গে কোম্পানির কাজকর্ম বা আর্থিক ক্রিয়াকলাপের সম্পর্ক নেই বলে ম্যাকডোনাল্ডস জানিয়েছে। রিচমন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক আইন অধ্যাপকের অভিমত, মি টু পর্বে কর্মস্থলের পরিবেশ সংক্রান্ত যেসব বিষয় সামনে এসেছে, ম্যাকডোনাল্ডসের সিদ্ধান্ত সেগুলি নিয়ে সক্রিয় হওয়ার লক্ষণ বলেই মনে হয়। অন্য কোম্পানিরা সবসময় এ ধরনের তথ্যের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করে না বা তাদের সিইও-কে সরিয়ে দেয় না। তাই মনে হচ্ছে, এক্ষেত্রে ওরা একটা কঠোর নীতি প্রয়োগ করার চেষ্টা করছে।